বুয়েটছাত্র ফারদিন নুর পরশের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে দাবি করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। র্যাবও বলছে একই কথা। এ দাবির প্রেক্ষিতে ‘আত্মহত্যার প্রমাণ’ দেখতে ডিবির আহ্বানে রাজধানীর মিন্টো রোডে সংস্থাটির কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে ‘আত্মহত্যার প্রমাণ’ সম্পর্কে ডিবির তদন্তের বিস্তারিত তথ্য জেনেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, কিছু কিছু জায়গায় গ্যাপ আছে, কিছু অস্পষ্টতা আছে। এগুলো নিয়ে আরও পরিষ্কার হওয়া দরকার।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন এটা ডিবির তথ্য-প্রমাণ থেকে ধারণা করা যায়। এর পেছনে কোনো সলিড তথ্য-প্রমাণ দেখাতে পারেনি। তবে ডিবির কর্মতৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, তদন্তে পাওয়া ফাইন্ডিংস ডিবির পক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে। আলামতগুলো প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়েছে। এগুলোর পেছনে তারা বেশ ‘এফোর্ড’ দিয়েছে। তবে কিছু কিছু বিষয়ে গ্যাপ আছে। আমরা আশা করি, তারা আরও কাজ করবেন।
ডিবির দেখানো আলামত যথেষ্ট বলে মনে করেন কিনা, এমন প্রশ্নে তারা বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছে শতভাগ তো করা সম্ভব না, কিছু কিছু ক্ষেত্রে গ্যাপ আছে। সে ক্ষেত্রে তারা ভবিষ্যতে আরও কাজ করবেন। আমাদের যে পয়েন্টগুলো ছিলো আমরা বলেছি। তারা এটা নিয়েও কাজ করবে বলেছে।
এর আগে, গতকাল বুধবার ফারদিনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত নিয়ে ডিবি জানায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ‘আত্মহত্যা’র পেছনের কিছু কারণের কথাও উল্লেখ করে ডিবি। একইদিন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন দাবি করেন, ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল সেতু থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টসহ অন্যান্য সব সংশ্লিষ্ট আলামত বিবেচনা করে আমাদের তদন্তে বের হয়ে এসেছে, বুয়েটশিক্ষার্থী ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মারা যান।
প্রসঙ্গত, গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূরের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। এ ঘটনায় বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে রামপুরা থানায় মামলা হয়। ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে ওই মামলা করেন। মামলার পর গত ১০ নভেম্বর ফারদিন নূর পরশকে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগে রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে বুশরাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে- এমন নানা তথ্যের মধ্যেই তদন্তে তার আত্মহত্যার তথ্য জানালো ডিবি।