পাবনার ঈশ্বরদীতে কমতে শুরু করেছে সব ধরনের চালের দাম। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে চিকন চালের দাম কেজিতে পাঁচ-ছয় টাকা এবং মোটা চালের দাম এক-দুই টাকা কমেছে। সংশ্লিষ্টরা জানায়, খাদ্যগুদামে ধান-চাল সংগ্রহে সরকার দাম না বাড়ানোয় বাজারে ধান-চালের দাম কমতে শুরু করেছে। এদিকে সরকারের বেঁধে দেওয়া দরে ধান-চাল সরবরাহ করতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়েছেন ঈশ্বরদীর মিলাররা। যে কারণে এবার উপজেলার ৩২৯ জন তালিকাভুক্ত মিলারের মধ্যে মাত্র ৫৪ জন মিলার অর্থাৎ মাত্র ১৬ দশমিক ৪১ ভাগ গুদামে চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। চুক্তির বাইরে রয়েছেন প্রায় ৮৪ ভাগ মিলার। এতে চলতি আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, ঈশ্বরদীতে তালিকাভুক্ত মিলারের সংখ্যা ৩২৯টি। যার মধ্যে ১৭টি অটোরাইস মিল ও ৩১২টি হাসকিং মিল রয়েছে। এর মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে পাঁচটি অটো এবং ৪৯টি হাসকিং মিল। যা মোট মিলের মাত্র ১৬ দশমিক ৪১ ভাগ। এসব মিলারদের ৩ হাজার ৬৪৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ধান-চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ চলতি মৌসুমে কৃষক ও মিলারদের কাছ থেকে ঈশ্বরদী এলএসডি গুদামে ৪ হাজার ২৯১ টন চাল, ১০০ টন ধান এবং মুলাডুলি সিএসডি গুদামে ৪ হাজার ২৯২ টন চাল, ১০০ টন ধান সংগ্রহ করার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে সোমবার ঈশ্বরদী সরকারি গুদামে আমন সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন করা হয়। পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস এ অভিযানের উদ্বোধন করেন। এ সময় মিলা মালিকরা জানান, মিলারদের লাভ না হলেও সরকারি ক্রয়মূল্য বৃদ্ধি করা হলে স্থানীয় বাজারে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাবে। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকারি গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ না হলেও বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। চিকন চালের দাম ইতিমধ্যেই কেজিতে পাঁচ-ছয় টাকা এবং মোটা চালের দাম এক-দুই টাকা কমেছে। ঈশ্বরদী চালকল মালিক সমিতির সভাপতি জুলমত হায়দার বলেন, সরকারিভাবে সংগ্রহ না হলেও দেশের ধান-চাল দেশেই রয়েছে। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে চাল আমদানি হচ্ছে। যে কারণে দেশে বর্তমানে চালের দাম নিম্নমুখী। এর মধ্যেই চিকন ও মোটা চালের দাম কমে গেছে। মিলাররা লোকসান দিয়ে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহে আগ্রহী নন। এ জন্য সরকার লাইসেন্স বাতিল করলেও কিছু করার নেই। তবে ধান ও চালের দাম না বাড়িয়ে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মিলারদের লাভ না হলেও সবার জন্য লাভ হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, সরকারিভাবে ধানের দাম কেজিপ্রতি ২৮ টাকা ও চালের দাম ৪২ টাকা ধরা হয়েছে। তবে সরকার ইতিমধ্যে মিলারদের স্বার্থে শতকরা ২ টাকা হারে উত্স কর প্রত্যাহার করেছে। এতেও চুক্তিবদ্ধ মিলাররা বরাদ্দকৃত সম্পূর্ণ চাল সরবরাহ করবেন কি না সন্দেহ রয়েছে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।