ছাত্রলীগ আরও বেশি সক্রিয় ও আরও বেশি উজ্জীবিত করতে সারা দেশে পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বের দায়িত্ব পাওয়া সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। শেখ ওয়ালি আসিফ বলেন, সংগঠনকে গতিশীল করতে প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ‘সম্মেলনের উৎসব’ হবে। আমরা সারা দেশের ছাত্রলীগের কাছে যাবো, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কথা শুনব। তাদের মধ্য থেকে যোগ্য নেতৃত্ব বের করে আনব। এ সময় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠন পরিচালনা এবং বিতর্কমুক্ত ছাত্রলীগ উপহার দেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক। বৃহস্পতিবার ইত্তেফাকের সঙ্গে আলাপকালে ছাত্রলীগের এ দুই নেতা এসব কথা বলেন।
সম্মেলনের বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হলে নেতৃত্ব নির্বাচনের ঘাটতি এবং অভিযোগ কমে আসবে। সামনের দিনগুলোতে আমরা আরও বেশি সতর্ক থাকব, আরও বেশি যুগোপযোগী, সাংগঠনিক সক্রিয়তা ও বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করব। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদকে কার্যকর করতে কাজ করব। দায়িত্ব বিকেন্দ্রীকরণ করলে সংগঠন গতিশীল হবে। কেন্দ্র ও তৃণমূল সুন্দরভাবে গড়ে তোলা যাবে।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সাদ্দাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আমরা কাজ করে যাবো। এ দেশ থেকে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে মূলোৎপাটনে সবসময় দৃঢ় অবস্থান থাকবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী—এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার উপযোগী দক্ষ মানুষ আমরা হতে চাই। ছাত্রলীগে অংশীদারত্বমূলক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক—সেটিই আমরা চাই। কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদকে কার্যকর করার বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করব। দায়িত্বকে যদি আমরা আরও বেশি বিকেন্দ্রীকরণ করতে পারি, তাহলে সংগঠন আরও বেশি গতিশীল হবে বলে আমরা মনে করি। সাংগঠনিক জবাবদিহিতা থাকবে, কেন্দ্র এবং তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় হবে।’
সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি সাজানো বাগান। এখন আমাদের কর্তব্য মালি হয়ে বাগানের পরিচর্যা করা, শেখ হাসিনার চলার পথকে মসৃণ করা। আমরা ইতিমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আমাদের এখন লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রধান লক্ষ্য স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলা। স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলার যে ধরনের পরিবেশ দরকার, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় কাজ করে যাবে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির তৎপরতা রুখতে সবসময় মাঠে কাজ করে যাবে। এদের যে কোনো অপতত্পরতার বিরুদ্ধে, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বিনষ্ট করে এমন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে দাঁতভাঙা জবাব দিতে সবসময় প্রস্তুত থাকবে ছাত্রলীগ।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে আবেগতাড়িত হয়ে অনেকেই অনেক কথা বলে থাকে। আমরা চেষ্টা করব, সব ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে থেকে শেখ হাসিনা যেমন পরিবেশ চান, যেমন ছাত্রলীগ চান, সেভাবেই ছাত্রলীগকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব। আমরা ছাত্রলীগের সুনামকে বিন্দুমাত্র ম্লান হওয়ার সুযোগ দেব না। এ ইতিহাসকে আরও গৌরবান্বিত করার জন্য কাজ করে যাব ।
এদিন বেলা ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এসে সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনা নিয়ে অন্তত আমরা যত দিন দায়িত্বে আছি, সারা বাংলাদেশে প্রতিটি সপ্তাহে সম্মেলনের উৎসব হবে। উপজেলা, জেলা পর্যায়ের ইউনিটে সপ্তাহে, অর্ধমাসে অথবা মাসে সম্মেলনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি।
৩০তম সম্মেলনের দুই সপ্তাহ পর গত মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের সাদ্দাম হোসেনকে সভাপতি এবং একই বিভাগের একই বর্ষের ছাত্র শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মাজহারুল কবির শয়ন আর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন তানভীর হাসান সৈকত। অন্য দিকে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণে রাজীবুল ইসলাম সভাপতি ও সজল কুণ্ডু সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন।