বুধবার, ৩১ মে ২০২৩, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

দেশে ২৬ শতাংশ মানুষ বাত রোগে ভুগছেন

আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:৩৮

দেশে মোট জনগোষ্ঠীর অন্তত ২৬ শতাংশ মানুষ শরীরের কোনো না কোনো অঙ্গে বাত ব্যথায় ভোগেন। বাত মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যে কোনো বয়সে মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বাত ব্যথা মেডিসিন বিভাগের তথ্য মতে, দেশে মোট ৬৪৪ ধরনের রিউমাটোলজি বা বাত রোগ রয়েছে। বাত রোগে আক্রান্তরা যথার্থ চিকিৎসার অভাবে কর্মক্ষম থেকে অক্ষম মানুষে পরিণত হন। অন্যদিকে  পরিবারগুলোও দরিদ্র হতে থাকে। তাই সবার আগে রোগ নির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাস্তবতা হলো এ বিষয়ে মানুষ সচেতন নয়। গতকাল শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব কনভেনশন হলে বাত রোগীদের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো.নজরুল ইসলাম।

বাত রোগীদের নিয়ে রিসার্চের তথ্য-উপাত্তের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩৫ লাখ নারী-পুরুষ হাড়ক্ষয় রোগে ভুগছেন। এর মধ্যে প্রায় ১৭ লাখ মানুষ রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, প্রায় ৮০ লাখ মানুষ হাঁটু ব্যথা বাতে ও প্রায় ১৩ লাখ মানুষ মাজা ব্যথা বা স্পনডাইলো আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগছেন। ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, এসব রোগের মধ্যে বেশি প্রকোপের রোগগুলো হলো—অস্ট্রিও আর্থ্রাইটিস, অস্ট্রিপোরোসিস বা হাড়ক্ষয় রোগ, মাজা ব্যথা বাত বা স্পনডাইলো আর্থ্রাইটিস, এসএলই বা লুপুস। এছাড়া সেপটিক আর্থ্রাইটিস, রিয়্যাক্টিভ আর্থ্রাইটিসেও ভুগছেন দেশের অনেক মানুষ।

বাত রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নিয়মতান্ত্রিক জীবন, সুষম খাদ্যগ্রহণ, প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন নেওয়া, নিয়মিত প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করা, জীবন-যাপনে চিকিত্সকের নির্দেশনা মেনে চলা ও নিয়ম করে ওষুধ সেবন করা জরুরি। কারণ বাতের রোগের চিকিৎসায় ব্যথানাশকের প্রয়োজন আছে। কিন্তু তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে ও চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া খেলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো বাতের রোগগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, বাতের রোগগুলোও চিকিৎসায় ভালো থাকে। তাই যতদিন যেমন করে ওষুধ খেতে হবে তা চালিয়ে যেতে হবে। যথাযথ চিকিৎসার অভাবে পঙ্গু হয়ে যাওয়া কারো কাম্য নয়। বাত রোগের সুচিকিৎসার জন্য আরো অনেক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও বাত রোগ বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে সরকারের পাশাপাশি বাত রোগীদের জন্য বেসরকারি উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে দিন দিন চিকিৎসা ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হচ্ছে। অনেক জটিল ও কঠিন রোগের বিশ্বমানের চিকিৎসা দিচ্ছেন আমাদের চিকিৎসকরা। যা সত্যি আমাদের সাহস যোগায়। অনুষ্ঠানে রোগীরা তাদের বাত ব্যথার কষ্টের কথাগুলো তুলে ধরেন। এ সময় ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বাত রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিকারের উপায় নিয়ে সায়েন্টিফিক প্রেজেন্টেশন দেওয়া হয়।

 

ইত্তেফাক/ইআ