এবারও থার্টিফাস্ট নাইটে কক্সবাজারে উন্মুক্ত কোন আয়োজন ছিল না। এরপরও ২০২২ সালকে বিদায় ও সৈকতের বালিয়াড়িতে সমবেত হয়ে নেচে-গেয়ে পর্যটকরা নতুন বছর ২০২৩ সালকে বরণ করেছেন। একই সঙ্গে জমজমাট ইনডোর প্রোগ্রামের মাধ্যমে বর্ষবরণের আয়োজন করেছে তারকা হোটেলগুলো। নেচে গেয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় হোটেলে অবস্থান করা অসংখ্য পর্যটক।
সরকারি নির্দেশনায় উন্মুক্ত অনুষ্ঠান ও আতশবাজি নিষিদ্ধ ছিল। এরপরও রাতের সৈকতে নিজ নিজ উদ্যোগে আতশবাজি, ফানুস উড়িয়ে সাউন্ড বক্সে গান বাজিয়ে উন্মাদনায় ফেটে পড়ে পর্যটক ও স্থানীয়রা। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে সমুদ্র সৈকত ও তারকা হোটেলগুলোতে সরেজমিনে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
তবে, ট্যুরিস্ট ও জেলা পুলিশ, র্যা্ব ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সকল বিভাগের সদস্যদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ছিল উল্লেখ করার মতো।
বর্ষবরণ উপলক্ষে আগে থেকেই তারকা হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলো বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। এছাড়া সুস্বাদু খাবার, নানা পদের আইটেমে গালা ডিনার, ফ্যামিলি নাইট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসে রাত ৮টার পর থেকেই শুরু হয় বছরের শেষদিন উদযাপন। আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বিভিন্ন আইটেমের খাবার ও পানীয় রাখা হয়। এর পাশাপাশি ডিজে সনিকার বাজনায় নাচে তালে মেতে উঠেন পর্যটকরা। যোগদেন বিদেশি পর্যটকরাও।
একই রকম আয়োজন করে সৈকতের অভিজাত হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্ট, সি-গাল, কক্স টু ডে, লং বিচ, সি-প্যালেস, সি পার্ল হোটেলসহ অন্যান্য হোটেল। এছাড়া পর্যটন স্পট দরিয়ানগর, ইনানীর ইকো রিসোর্টসহ শহরের বাইরে বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ করা হয়।
এছাড়া সৈকত ও আশপাশের এলাকা আলোকসজ্জায় আলোকিত করার পাশাপাশি আয়োজন করা হয় নানা অনুষ্ঠানের। পর্যটকরা সমুদ্র সৈকত ছাড়াও ইনানী, হিমছড়ি, রামু, চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক, মহেশখালীসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরে বেড়িয়েছে।
তবে, এবার প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে উল্লেখ করার মতো পর্যটক যেতে পারেনি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, যোগাযোগ সমস্যা থাকার পরও অল্প সংখ্যক পর্যটক প্রবালদ্বীপে অবস্থান করে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে।
ওশান প্যারাডাইস হোটেলে অবস্থান করা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রবিউল আউয়াল দম্পতি বলেন, প্রথমবার এভাবে বর্ষ বরণের সাক্ষী হলাম আমরা। বলরুমে জমজমাট আয়োজনে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা ছিল। সুব্যবস্থাপনায় কোন উচ্চবাচ্য ছাড়াই নেচে-গেয়ে রাত দেড়টা পর্যন্ত আনন্দ করেছি হোটেলে অবস্থান করা সকল পর্যটক। আমাদের সঙ্গে বিদেশিরাও যোগ দেন। তবে, একে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো বলা চলে। কারণ খোলা মঞ্চের আয়োজন আর বদ্ধ রুমের আয়োজনের তফাত অনেক।
ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. জিললুর রহমান বলেন, অনুষ্ঠান না থাকলেও আমাদের ধারণা ছিল লক্ষাধিক পর্যটক সমাগম করবে নতুন বছর বরণে। হয়েছেও তাই। কলাতলী হতে লাবণী পয়েন্ট সর্বত্র রাত ২টা পর্যন্ত লোকারণ্য ছিল। তাদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য বিভাগও নিশ্ছিদ্র পাহারা বসায়। সমানভাবে দায়িত্ব পালন করা হয় ইনডোর প্রোগ্রাম করা তারকা হোটেলগুলোতেও।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান বলেন, সবার আন্তরিক সহযোগিতায় সুন্দরভাবেই বর্ষবরণ হয়েছে কক্সবাজারে। সৈকতে পর্যটকসহ স্থানীয়রা গভীর রাত পর্যন্ত নিজেদের মতো আড্ডা গানে সময় কাটায়।