বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৫ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

পাবনায় যুবলীগ নেতার ভাইয়ের গুলিতে রিকশাচালক নিহত

আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:০২

পাবনার ঈশ্বরদীতে তুচ্ছবিষয়কে যুবলীগ নেতার গুলিতে মামুন হোসেন (২৫) নামে এক রিকশাচালককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৪ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পৌর শহরের কাচারিপাড়া কড়ইতলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মামুন হোসেন পিয়ারাখালী এলাকার মানিক হোসেনের ছেলে। আহতরা হলেন, পিয়ারাখালী এলাকার শরীফ হোসেনের ছেলে রকি (২৬) ও বাবু ওরফে বরকি বাবুর ছেলে সুমন (২৫)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈশ্বরদী বিমানবন্দর সড়কের কাচারিপাড়া মোড়ে যাত্রীবাহী ভটভটি ও লেগুনার সংঘর্ষে লেগুনার সামনের গ্লাস ভেঙে যায়। লেগুনার চালক ভটভটির গতিরোধ করে চালকের কাছে গ্লাস ভাঙার জরিমানা দাবি করেন। কাচারীপাড়া মোড়ে চায়ের দোকানে বসে থাকা মামুন (২৫), রকি (২৬) ও সুমন দুই চালকের মাঝে বাকবিতণ্ডা থামাতে যায়। এ সময় রহিমপুর গ্রামের নুর মোহাম্মদ নুরুর ছেলে আনোয়ার হোসেনের (৪০) ঘটনাস্থলে এসে মামুন, রকি, সুমনসহ ভটভটি চালককে হুমকি-ধামকি দেয়। এরা পাল্টা আনোয়ারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে আনোয়ারের সমর্থনে তিনটি মোটরসাইকেলে ৯ জন ও রিকশায় আরও দু’জনসহ ১১ জন ঘটনাস্থলে আসার পর মামুন, রকি, সুমনসহ স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

নিহত মামুনের মামা মনিরুল ইসলাম জানান, বাকবিতণ্ডায় সময় আনোয়ার হোসেন নেশাগ্রস্থ ছিল। তারা ভটভটির চাঁদা আদায়ের সঙ্গে যুক্ত। আনোয়ার ঘটনাস্থলে এসে ভটভটি চালকের পক্ষ নিয়ে লেগুনার চালক ও এলাকার লোকজনের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে গেলে আনোয়ার পিস্তল বের করে মামুন ও সুমনকে গুলি করে এবং আনোয়ারের সহযোগীরা রকিকে ছুরিকাঘাত করে।  তলপেটে গুলি লাগায় মামুন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আহত রকি ও সুমনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঈশ্বরদী হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক রহিমা ফেরদৌসী জানান, মামুনকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছে। গুরুতর আহত সুমন ও রকিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল জানান, অভিযুক্ত আনোয়ার যুবলীগের কোনো পর্যায়ের নেতা এমন কি কর্মীও নয়। 

পৌর যুবলীগের সধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম লিটন জানান, আনোয়ার হোসেন পৌর কাউন্সিলর ও পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিনের ছোট ভাই। এ ঘটনার সঙ্গে দলীয় পর্যায়ের কোনো বিষয় নেই। ভটভটি আর লেগুনার সংঘর্ষের কারণে এ ঘটনা ঘটে।  

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোম্বামী জানান, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, ভটভটি ও লেগুনার সংঘর্ষে সামনের গ্লাসভাঙ্গার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ ঘটেছে। এ কে বা কারা জড়িত তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।  বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

ইত্তেফাক/ইআ/পিও