চায়না কমলার সফল চাষ করে মাত্র তিন বছরেই ব্যাপক লাভবান হয়েছেন মাগুরার শ্রীপুরের এক শিক্ষক দম্পতি। আশুতোষ বিশ্বাস উপজেলার নাকোল সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজের আইসিটি শিক্ষক এবং তার সহধর্মিণী মায়া চৌধুরী মাগুরা সদর উপজেলার কছুন্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাদের বাড়ি উপজেলার মধুপুর গ্রামে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি কমলালেবু গাছে শতশত লেবু থোকায় থোকায় ঝুলছে। আকারে একটু ছোট হলেও লেবুগুলোর রঙ বিদেশি চায়না লেবুর মতোই। কমলা রংয়ের ধরন্ত লেবুগাছগুলোর এ অপরূপ দৃশ্য দেখতে প্রতিনিয়তই ভিড় করছে অসংখ্য দর্শনার্থী। মাগুরার জেলা প্রশাসক, মাগুরার পুলিশ সুপার, কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা কৃষি অফিসারসহ জেলা উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এ কমলা বাগান পরিদর্শন করে মুগ্ধ হয়েছেন। অধিক লাভজনক হওয়ায় উপজেলা কৃষি অফিস এ চাষের বিষয়ে কৃষকদের বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এ কমলা বাগানের মালিক আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, তিন বছর আগে তিনি চুয়াডাঙ্গা থেকে ৬৪টি কমলা লেবুর চারা ২০০ টাকা দরে করে কিনে এনে বাড়ির অদূরেই কুমার নদের পাড়ে ৩৩ শতাংশ জমিতে এ চারা রোপণ করেন। রোপণের প্রথম বছরে কমলা না ধরলেও দ্বিতীয় বছরে কিছু কিছু গাছে কমলা ধরেছিল। তৃতীয় বছরে এসে প্রায় প্রতিটি গাছেই ৪০ কেজি থেকে ৮০ কেজি কমলা ধরেছে। প্রতি কেজি কমলা বাগান থেকেই ১০০ টাকা টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে পাইকাররা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ চাষ করতে অন্য ফসলের মতোই জৈব সার, ইউরিয়া, টিএসপি, পটাশসহ কৃষিকাজে প্রচলিত স্বাভাবিক সারই ব্যবহার করা হয়। মাঝে মধ্যে গাছে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। উপজেলা কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। এই চাষকে আরও সম্প্রসারণের জন্য এ বছর প্রায় ২ হাজার চারা তৈরি করেছি। প্রতিটি চারা ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কমলা বাগান পরিচর্যায় আমার সহধর্মিণীও কাজের ফাঁকে পরিশ্রম করে থাকেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা বলেন, আশুতোষ বাবুর কমলা বাগানে দৃষ্টিনন্দন কমলা ধরেছে। আমরা সকলেই কয়েকবার সেখানে গিয়েছি। একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বাগানটি সার্বক্ষণিক পরিদর্শন করছেন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। অন্য কৃষকদের মধ্যে এ চাষ ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে এ চাষ ভালো হয়। ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় এবং বাজারে এ লেবুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষকদেরকে এ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে ।