শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে প্রধান করে কমিটি গঠন

কাওরান বাজারের কাঁচাবাজার সরাতে তালিকা হচ্ছে

আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:০০

রাজধানীর কাওরান বাজারের কাঁচাবাজার ও অন্যান্য দোকান অন্যত্র সরিয়ে নিতে অনেক বার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। ব্যবসায়ীদের আপত্তি ও মার্কেট নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ায় কাওরান বাজারেই শেষ পর্যন্ত এই পাইকারি বাজার থেকে যায়। এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) জাতীয় নির্বাচনের আগেই রাজধানীর কাওরান বাজারের কাঁচাবাজার ও অন্যান্য দোকান সরিয়ে নিতে উদ্যোগ নিয়েছে।

ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়, কাওরান বাজার স্থানান্তরের জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে ডিএনসিসির ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামীম হাসানকে সভাপতি করা হয়েছে। সদস্যসচিব করা হয়েছে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মোতাকাব্বীর আহমেদকে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে কাওরান বাজার স্থানান্তর করা হবে। কিচেন মার্কেটের প্রায় ৯০০ দোকান চলে যাবে যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে। বাকি দোকানগুলোর কিছু আমিনবাজার ও গাবতলীতে নেওয়া হবে।

যেখানে স্থানান্তর করা হবে সেসব মার্কেটের নির্মাণকাজ প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শেষ। কোন ব্যবসায়ীকে কোন জায়গায় স্থানান্তর করা হবে, সে বিষয়ে তালিকা করা হচ্ছে।  কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সহ-সভাপতি- ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সদস্য- ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (টিইসি), প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এবং ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

জানা যায়, কাওরান বাজারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চারটি মার্কেট রয়েছে। মার্কেটগুলো হচ্ছে কিচেন মার্কেট, ১ নম্বর ভবন মার্কেট, ২ নম্বর ভবন মার্কেট ও কাঁচামালের আড়ত মার্কেট। মার্কেটগুলোতে দেড় হাজারের বেশি দোকান রয়েছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী এক বছরের মধ্যে কাঁচাবাজার ও দোকান স্থানান্তর করা হবে। ব্যবসায়ীদের একাংশ যাচ্ছে যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে, কিছু অংশ নেওয়া হবে গাবতলী ও আমিনবাজারে। অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সময় ২০০৬ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ‘ঢাকা শহরের তিনটি পাইকারি কাঁচাবাজার নির্মাণ প্রকল্প’ পাস করে। কৃষিপণ্যের বাজার ও সরবরাহব্যবস্থা উন্নয়নের পাশাপাশি কাওরান বাজারের যানজট কমাতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। এই উদ্দেশ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, আমিনবাজার এবং মহাখালী এলাকায় তিনটি কাঁচাবাজার করা হয়েছিল। দুই সিটি করপোরেশন ভাগ হওয়ার পর এ বাজার স্থানান্তরের দায়িত্ব পড়ে উত্তর সিটির উপর। প্রয়াত মেয়র মো. আনিসুল হক দায়িত্ব গ্রহণের পর কাঁচাবাজার স্থানান্তরে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তার মৃত্যুর পর আর এ বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি। অনেক বছর ধরে এসব দোকান সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা হলেও তা বিভিন্ন কারণে বাস্তবায়ন হয়নি।

এ বিষয়ে কিচেন মার্কেট ইসলামিয়া শান্তি সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, আসলে সিটি করপোরেশন আমাদের স্থানান্তরের জন্য যেসব মার্কেট করেছে সেগুলোর বেশির ভাগই ব্যবসার অনুপযোগী। প্রায় ৫০ বছর ধরে এখানে আমরা আছি। এখান থেকে ওসব মার্কেটে স্থানান্তরের বিষয় আসলে অবশ্যই আমরা মনের দিক থেকে শান্তি পাবো না। আমরা চাই এখানেই উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিক কোনো ব্যবস্থা করে আমাদের এখানেই ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হোক। এছাড়া সিটি করপোরেশন এ বিষয়ে আমাদের এখনো কিছু জানায়নি। যদি সাময়িকভাবে কোনো কারণে এখান থেকে আমাদের যেতে হয়, তাহলে অবশ্যই ক্ষতিপূরণসহ ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন রেজুলেশন আকারে করতে হবে। তাহলে ব্যবসায়ীরা তা মেনে নেবে।

ইত্তেফাক/এমএএম