শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ইউক্রেনের মতো অন্য সংকটগুলোতেও ইইউকে এগিয়ে আসার আহ্বান

আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৩৬

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) তার বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে ইউক্রেনের জন্য বিশ্বের সরকারগুলো যে সমর্থন দিয়েছে তার প্রশংসা করেছে। তবে এ প্রতিবেদনে 'দ্বৈত নীতির' জন্য অনেক ইইউ রাষ্ট্রের সমালোচনাও করেছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার প্রশংসা করে এইচআরডাব্লিউ অন্যান্য সংঘাতের বেলাতেও অনুরূপ প্রতিক্রিয়া ও কৌশল অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) তার বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে ইউক্রেনের জন্য বিশ্বের সরকারগুলো যে সমর্থন দিয়েছে তার প্রশংসা করেছে।

বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এই এনজিও জানিয়েছে, ২০২২ সালে মানবাধিকার সংকট ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হয়, তবে বছরটি মানবাধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগও তৈরি করেছে।

সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক তিরানা হাসান বলেন, 'প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণের সিদ্ধান্তের মধ্যে একটি বিষয় পরিষ্কার, এমন সংকটে 'বৈশ্বিক মানবাধিকার ব্যবস্থা' দ্রুত সক্রিয় হতে পারে। ইউক্রেনের এই যুদ্ধে আমরা যে অন্ধকার দেখেছি তার মধ্যে এক উজ্জ্বল আলোও দেখা গেছে।'

২০২২ সালে মানবাধিকার সংকট ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হয়, তবে বছরটি মানবাধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগও তৈরি করেছে।

তিনি জানান, অনেক বছর ধরে সংকটে পতিত অন্য দেশের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে সরকারগুলো এক ধরনের দ্বিধা দেখিয়ে আসছে। কিন্তু ইউক্রেনের পাশে তারা যেভাবে দাঁড়িয়েছে, তা অসাধারণ এক সম্ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেয়, বিশ্বব্যাপী তাদের মানবাধিকারের দায়িত্ব উপলব্ধি করতে পেরেছে তারা। প্রতিবেদনের সারমর্মে উল্লেখ করেন হাসান। 

রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর অনেক দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং ইউক্রেনকে সমর্থন দেয়। সংস্থাটি সরকারগুলোকে ইউক্রেনের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেভাবে সর্বোত্তম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, অন্যান্য সংকটের মোকাবেলার ক্ষেত্রেও অনুরূপ রাজনৈতিক ইচ্ছা অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে।

অনেক বছর ধরে সংকটে পতিত অন্য দেশের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে সরকারগুলো এক ধরনের দ্বিধা দেখিয়ে আসছে।

তিরানা হাসান ইউক্রেনের জন্য সরকারগুলো কর্তৃক প্রদত্ত সমর্থনের প্রশংসা করলেও সঙ্গে তিনি আরও জানান, সব সরকারের উচিত সংহতির একই মনোভাব বিশ্বের অন্য মানবাধিকার সংকটে দেখানো দরকার, কেবল যেসব ক্ষেত্র নিজেদের স্বার্থের সঙ্গে খাপ খায়, শুধু সেখানে নয়।

এইচআরডাব্লিউ মনে করছে, মানবাধিকারের প্রতি সংহতি দেখানোর ক্ষেত্রে ইইউ এর অধিকাংশ দেশ 'দ্বৈত নীতি' দেখিয়েছে আর তা প্রকাশ পায় যখন তারা সিরিয়া, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, সোমালিয়া থেকে আগত আশ্রয় চাওয়া অগণিত ব্যক্তির প্রতি ভিন্ন মনোভাব দেখায়।

তিরানা হাসান ইউক্রেনের জন্য সরকারগুলো কর্তৃক প্রদত্ত সমর্থনের প্রশংসা করেন।

ইথিওপিয়ার পরিস্থিতিকে বিশ্বের অন্যতম মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করে হাসান জানান, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইথিওপিয়ার ক্ষেত্রেও সমান জবাবদিহিতার নিদর্শন রাখুক।

৭১২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এইচআরডব্লিউ বিশ্বজুড়ে মানুষের মানবাধিকার ক্ষুণ্ণের ঘটনা এবং ইরান, শ্রীলঙ্কা, চীন ও অন্যান্য জায়গায় সংঘটিত বিক্ষোভের ঘটনাগুলো বিচার বিশ্লেষণ করেছে।

ইথিওপিয়ার পরিস্থিতিকে বিশ্বের অন্যতম মানবিক সংকট।

মানবাধিকার সংগঠনটি জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটগুলোর একটি হচ্ছে মিয়ানমার, যেখানে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সুচির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিবেশীদের প্রতি মিয়ানমারের জান্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

ইত্তেফাক/ডিএস