নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় নুরজাহান বেগমকে (৫৮) হত্যার দায়ে তার ছেলেসহ সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে নোয়্খালীর জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডরপ্রাপ্তরা হলেন, নিহত নুরজাহানের ছেলে হুমায়ুন কবির (২৯) ও তার সহযোগী নিরব (২৬), নুর ইসলাম (৩২), কালাম (৩০), সুমন (৩৩), হামিদ (২৮), ইসমাইল (৩০)। রায় ঘোষণাকালে তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জেলা জজ আদালতের পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে সুবর্ণচরের জাহাজমারা গ্রামের নুরজাহান বেগমকে হত্যার পর পাঁচ টুকরো করা হয়। চরজব্বার থানা পুলিশ ঘটনার পরদিন বিকেলে ওই গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে নুর জাহানের খণ্ডিত মাথাসহ দুই টুকরো উদ্ধার করে। এর পরদিন একই ধানক্ষেত থেকে লাশের আরও তিন টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাংস কাটার ধারালো অস্ত্র, বটি, একটি কোদাল এবং নুরজাহানের পরনে থাকা শাড়ি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় প্রথমে নিহত নুরজাহানের ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্তের এক পর্যায়ে সন্দেহভাজন হিসেবে হুমায়ুনের বন্ধু মো. নীরব ও কসাই নুর ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা মামলার বাদী হুমায়ুন জড়িত বলে তথ্য দেয়। এরপর হুমায়ুনকে গ্রেফতার এবং তাকে প্রধান আসামি করে আরও একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ।
মামলা বিবরণে উল্লেখ করা হয়, নিহত নুর জাহানের প্রথম সংসারের ছেলে বেলাল হোসেন ঘটনার এক বছর আগে মারা যান। তার রেখে যাওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে নুরজাহানের দ্বিতীয় সংসারে ছেলে হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে মায়ের ঝগড়া-বিবাদ বাধে। এ জের ধরে মাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হুমায়ুন। হত্যাকাণ্ডে বন্ধু, প্রতিবেশী ও স্বজনের সহায়তা নেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে নুরজাহানকে প্রথমে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশ পাঁচ টুকরো করে প্রতিবেশী পাওনাদারদের ধান ক্ষেতে ফেলে রাখে।