যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ক্যাপিটলে হামলা চালায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাজারো উন্মত্ত সমর্থক। সেইসব সমর্থকের মধ্যে একজনের নাম রিচার্ড বিগো বার্নেট। দুই বছর আগে মার্কিন কংগ্রেস ভবনে তাণ্ডব চালানোর সময় সেই সময়কার প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির ডেস্কে পা উঠিয়ে ছবির জন্য পোজ দেওয়া দাঙ্গাকারী তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
পেলোসির কার্যালয়ে ঢুকে পড়ার পর বার্নেট ছবি তোলার পোজ দেন এবং বের হওয়ার আগে দম্ভভরে একটি খাম তুলে নেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। যে ৮টি অভিযোগে বার্নেট দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তার মধ্যে জনসাধারণের প্রবেশ সীমাবদ্ধ এমন ভবন ও স্থানে প্রাণঘাতী অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ, সরকারি কাজে বাধা ও সরকারি সম্পত্তি চুরি।
তার কাছে একটি স্টানগান ছিল এবং পেলোসি থাকলে তা দিয়ে তিনি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের ভয়াবহ ক্ষতিসাধন করতে পারতেন বলে অভিযোগ কর্মকর্তাদের।
কৌঁসুলির বলছেন, সহিংসতার প্রস্তুতি নিয়েই সেদিন ৬২ বছর বয়সী বার্নেট এক হাজার ছয়শ কিলোমিটারেরও বেশি দূরবর্তী আরকানসো থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে আসেন।
কেন্দ্রীয় কৌঁসুলি অ্যালিসন প্রাউট বলেন, “সেসময় যদি পেলোসি সেখানে থাকতেন, তাহলে কী হতে পারতো, তা কেবল কল্পনাই করতে পারি আমরা,” বলেছেন কেন্দ্রীয় কৌঁসুলি অ্যালিসন প্রাউট।
ট্রাম্প সমর্থকরা কংগ্রেস ভবনে হানা দেওয়ার পর অন্য আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে পেলোসিও প্রতিনিধি পরিষদের ফ্লোর থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
একসময় দমকল বাহিনীতে কাজ করা বার্নেট শুনানিতে নিজেই নিজের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সেদিন তিনি সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়েছিলেন।
বার্নেট পেলোসির ডেস্কে গালাগালি করে লেখা একটি নোটও রেখে গিয়েছিলেন; পুলিশ তাকে ভবনটি থেকে বের করে দেওয়ার পর হ্যান্ডমাইকে চিৎকার করে ‘আমি ন্যান্সি পেলোসির অফিস দখলে নিয়েছিলাম’ বলে বড়াই করতেও দেখা গেছে তাকে।
সোমবার রায় ঘোষণার পর বার্নেট বলেছেন, তিনি ন্যায্য বিচার পাননি, কেননা জুরি তার সমমনাদের নিয়ে গঠিত হয়নি। তিনি আপিল করবেন বলে পরে তার আইনজীবী জানিয়েছেন।
তার সাজা আগামী ৩ মে ঘোষিত হবে, সে পর্যন্ত তিনি মুক্ত থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বিচারক। বিচারকরা তাকে সর্বোচ্চ কয়েক দশক পর্যন্ত কারাদণ্ডে ভূষিত করতে পারেন।
৬ জানুয়ারি ওই দাঙ্গার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতায় এখন পর্যন্ত ৯৪০ জনের বেশি মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রায় ৫০০ জন তাদের দোষ স্বীকারও করে নিয়েছেন।