রোববার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

মূল্য কমাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া চিঠিতে এফবিসিসিআই

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে

আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:২৬

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। এর ফলে ব্যবসা পরিচালনার খরচ আরও বেড়ে যাবে। স্থানীয় শিল্প ও রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। জ্বালানি খাতের রাজস্ব সমন্বয়ের মাধ্যমে মূল্য পুনর্নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ী নেতারা। সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই আহ্বান জানান। পাশাপাশি উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও চান তারা।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে সুলভ ও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, কোভিড-পরবর্তী বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম যখন সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সে মুহূর্তে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে বলে আশঙ্কা করছে ব্যবসায়ীরা।

চিঠিতে বলা হয়, চাহিদা অনুযায়ী স্পট মার্কেট থেকে জ্বালানি গ্যাস ক্রয় করা হলে উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার শর্তে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ক্যাপটিভের ক্ষেত্রে গ্যাসের মূল্য প্রতি কিউবিক মিটার ১৬ টাকার স্থলে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা অর্থাৎ ৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে ক্যাপটিভ খাতে গ্যাসের মূল্য ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৩০ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের বর্তমান হার বৃদ্ধি করে সব স্থলে একই হার ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ৫ দশমিক শূন্য ২ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৪ টাকা করা হয়েছে। যা আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন দাম কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন সংকটের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও উৎপাদন উপকরণসহ সকল খাতে ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধি সার্বিক পরিবহন ব্যয় এবং মুদ্রা বিনিময় হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসা পরিচালনা খরচ অত্যধিক বেড়ে চলেছে। এতে শিল্পকারখানাগুলো সচল রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি শিল্পখাতে আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যবসা পরিচালনার খরচ আরও বেড়ে যাবে। স্থানীয় শিল্প ও রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে অত্যধিক হারে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাবে এ খাতের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চিঠিতে সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পরিস্থিতি বিবেচনায় গ্যাসের মূল্য সমন্বয়ের বিপক্ষে তারা নয়। সব ভোক্তার ওপর চাপ না দিয়ে জ্বালানি খাতের রাজস্ব সমন্বয়ের মাধ্যমে বর্তমান মূল্য থেকে তাদের প্রস্তাবিত ৫৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করে ক্যাপটিভ এবং অন্যান্য খাতে গ্যাসের মূল্য পুনর্নির্ধারণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কামনা করেছেন। যা আগামী এপ্রিল মাস থেকে কার্যকর হতে পারে। সে সঙ্গে উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা চেয়েছেন তিনি।

ইত্তেফাক/এমএএম