শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৮ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

হামলা শুরুর বর্ষপূর্তির পরেই আরও বড় হামলা?

আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:১৫

ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছরের মাথায় রাশিয়ার আরও বড় হামলার আশঙ্কা করছে ইউক্রেন। তার আগেই যতটা সম্ভব প্রস্তুতির ওপর জোর দিচ্ছে কিয়েভ। রাশিয়া ন্যাটোর সরঞ্জাম ধ্বংসের জন্য সৈন্যদের পুরস্কার ঘোষণা করেছে। খবর ডয়চে ভেলে। 

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের উপর হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। প্রায় এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে রাশিয়া তেমন সাফল্য অর্জন করতে পারে নি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির ধারণা, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধের বর্ষপূর্তির আগে রুশ বাহিনী মরিয়া হয়ে ইউক্রেনের পূর্বে অন্তত কিছু এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে মুখরক্ষা করতে চাইছে। তাছাড়া পশ্চিমা বিশ্ব থেকে ব্যাটেল ট্যাংক এসে পড়ার আগে জোরালো হামলা চালিয়ে কিছু সুবিধা আদায় করতে চাইছে সে দেশ। পূবের বাখমুত ও আশেপাশের দশটি গ্রাম ও শহরের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। আরও  কয়েকটি শহরে হামলার খবর পাওয়া গেছে। 

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ আশঙ্কা করছেন, যুদ্ধের বর্ষপূর্তির দিন থেকেই রাশিয়া নতুন উদ্যমে বড় সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে। গত বছর রাশিয়া যে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার পুরুষকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করেছে, তাদের প্রায় অর্ধেক নতুন এই অভিযানে অংশ নিতে পারে। 

রেজনিকভ বলেন, সে কারণেই তিনি ইউক্রেনের সহযোগী দেশগুলির কাছে যত দ্রুত সম্ভব প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছেন। ফ্রান্স সফরকালে তিনি আরও অস্ত্রের আবেদন করেন। উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চলতি সপ্তাহেই আরও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে পারে। 

রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান' চালু থাকবে। পশ্চিমা বিশ্বের সরবরাহ করা ট্যাংক ও ক্ষেপণাস্ত্রের মতো ভারি অস্ত্রের কারণে সেই সংঘাত আরও মারাত্মক হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে মস্কো। ন্যাটো দেশগুলি থেকে সরবরাহ করা অস্ত্রও সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস বা দখল করতে পারলে রুশ সৈন্যদের জন্য বাড়তি পুরষ্কার ঘোষণা করেছে রাশিয়ার এক কোম্পানি। ক্রেমলিন সেই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। 

ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া সত্যি আরও  জোরালো হামলা শুরু করলে পশ্চিমা বিশ্ব বর্তমান ‘সংযম' কতটা আঁকড়ে ধরে থাকবে, সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে। যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি অনুযায়ী ‘রেড লাইন' বদলে চলেছে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা জোসেপ বরেল বুধবার বলেন, অ্যামেরিকা ও জার্মানির মতো দেশ শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তিনি বিস্মিত হবেন না। আপাতত এই দুই দেশ অবশ্য সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। ফ্রান্স ও পোল্যান্ডের মতো দেশ বিষয়টি বিবেচনার পক্ষে সওয়াল করছে। 

বরেল মনে করিয়ে দেন, যে ব্যাটেল ট্যাংক নিয়েও শুরুতে তর্ক-বিতর্কের পর ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। 

বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পখাতের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। এর আওতায় একাধিক দেশের ২২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কার্যকলাপ খর্ব করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে এক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা মরিয়া হয়ে রাশিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ করছে ওয়াশিংটন। রুশ অস্ত্র ব্যবসায়ী ইগর জিমেনকভও সেই তালিকায় রয়েছেন।

ইত্তেফাক/এফএস/এএএম