মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৭ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ইউক্রেনের ইউরোপীয় স্বপ্ন কতটা বাস্তব?

আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:২৫

ইউক্রেন দ্রুত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হবার স্বপ্ন দেখলেও বাস্তবে সেই পথ যে মোটেই সহজ নয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে সে কথা বুঝিয়ে দিচ্ছে ইইউ নেতৃত্ব। তবে নীতিগতভাবে কিয়েভকে স্বাগত জানাচ্ছে ব্রাসেলস।

গত প্রায় এক বছর ধরে রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করে চলেছে ইউক্রেন। ২০১৪ সাল থেকেই দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতা হুমকির মুখে। হামলার মুখে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বার বার ব্যাহত হচ্ছে। এরই মাঝে অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হবার স্বপ্ন দেখছে সে দেশ। কিন্তু ইউক্রেনের জন্য মানবিক, আর্থিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে এলেও সে দেশকে দ্রুত পূর্ণ সদস্য করার কথা এখনো ভাবতে পারছে না ইইউ।

সদস্যপদের কঠিন শর্ত পূরণ করতে একাধিক দেশ অনেক বছর বা দশক ধরে যেখানে অপেক্ষা করে রয়েছে, সেখানে রাজনৈতিক সংহতি সত্ত্বেও ইউক্রেনের জন্য ব্যতিক্রমের নজির গড়তে নারাজ ইউরোপের রাষ্ট্রজোট। আবেদনের ঠিক পরেই ইউক্রেনকে প্রার্থী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ইইউ ইতোমধ্যেই প্রথা ভেঙেছে৷ উল্লেখ্য, আবেদনের প্রায় এক দশক পর ২০১৩ সালে ইইউ-র সর্বশেষ সদস্য হিসেবে যোগদান করেছিল ক্রোয়েশিয়া। পোল্যান্ডের প্রায় ২০ বছর সময় লেগেছিল।

এমনই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার কিয়েভে বসছে ইইউ-ইউক্রেন শীর্ষ সম্মেলন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন ও ইউরোপীয় সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। বৃহস্পতিবারই ফন ডেয়ার লাইয়েন ট্রেনে করে কিয়েভে পৌঁছন। ইইউ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ইউক্রেনের শীর্ষ সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

ইউক্রেনের গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতি জোরালো সমর্থন জানালেও যুদ্ধের মাঝে ‘ফাস্ট ট্র্যাক' প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে দেশকে দ্রুত সদস্য করার পথে অগ্রসর হতে নারাজ ব্রাসেলস। সম্প্রতি ইউক্রেনে দুর্নীতি দমন অভিযানের প্রশংসা করেছে ইইউ। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইইউ আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া শেষ করতে অনেক বছর সময় লাগবে বলে কিয়েভকে মনে করিয়ে দিয়েছেন ব্রাসেলসের কর্মকর্তারা। ইউক্রেনের সরকার দ্রুত সব শর্ত মেনে চলতি বছরের শেষেই আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করতে চান। গত বছরের গ্রীষ্মকাল থেকে ইউক্রেনের অগ্রগতির প্রশংসা করেন ফন ডেয়ার লাইয়েন।

বৃহস্পতিবারের আলোচনার পর জেলেনস্কি বলেন, একমাত্র শক্তিশালী ইউক্রেন ও শক্তিশালী ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিলে ও আরও সমন্বয়ের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত জীবনযাত্রা অর্জন করা সম্ভব৷ এভাবেই বাধা ও হুমকি সত্ত্বেও মানুষ শক্তি ও প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে।

আপাতত জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কড়া নিষেধাজ্ঞার দাবি করছেন। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ইইউ নতুন দফার শাস্তিমূলক পদক্ষেপের যে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা যথেষ্ট জোরালো নয় বলে তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। ২৪শে ফেব্রুয়ারির আগে রাশিয়ার উপর ইইউ দশম দফা নিষেধাজ্ঞার গুচ্ছ অবশ্য চূড়ান্ত হয়নি।

 

 

ইত্তেফাক/জেডএইচ