নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে নিয়াজুল ইসলাম খানকে সভাপতি করায় নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। খোদ আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা বলছেন, এই নিয়াজুল এরশাদ শাসনামলে শহরের চাষাঢ়ায় কামাল ও কালাম জোড়া খুনের এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন এবং বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীকে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিও তিনি। শেষোক্ত মামলাটির তদন্ত শেষে পিবিআইয়ের চার্জশিটে ১২ জন অভিযুক্তের মধ্যে প্রথম নাম নিয়াজুল ইসলামের আসে।
তবে নিয়াজুল ইসলাম খান বলেন, মেয়রের মিছিলে তিনি অস্ত্র উঁচিয়ে ধরেননি। যখন তার ওপর হামলা হয়েছে তখন তিনি আত্মরক্ষার্থে তার লাইসেন্স করা পিস্তলটি বের করেছিলেন। গত শুক্রবার বিকালে নগরীর খানপুর এলাকায় বার একাডেমি স্কুলে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হন নিয়াজুল ইসলাম খান। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা দাবি করেন, ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় ফুটপাতে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী মিছিল বের করলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। সেদিন প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে আলোচনায় আসেন নিয়াজুল ইসলাম খান। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নিয়াজুল ইসলাম অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। সে যে মেয়র আইভীকে গুলি করার জন্য পিস্তল উঁচিয়ে তেড়ে এসেছে সেটা সারা বিশ্ব দেখেছে। তাকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি করার বিষয়টি শুধু পার্টির লোকজন না, সাধারণ পাবলিকও ভালো চোখে দেখছে না।’
জানা যায়, নিয়াজুলের উত্থান আশির দশকের মাঝামাঝিতে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে। ১৯৮৮ সালে আলোচিত জোড়া খুনের (কামাল ও কালাম) মামলার আসামি হন তিনি। এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পান নিয়াজুল। এই সময়ে এলজিইডির ঠিকাদারি, নগরীর চাঁদমারীর বস্তি, গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগও ওঠে নিয়াজুলের বিরুদ্ধে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নিয়াজুলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম সুইট র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। ঐ সরকারের আমলে একইভাবে তাদের আত্মীয় যুবদলের ক্যাডার মমিনউল্লাহ ডেভিডও নিহত হন। এ সময় নিয়াজুল দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশে ফেরেন তিনি।