শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

শিক্ষক সমিতির দু’গ্রুপ মুখোমুখি, পুলিশ মোতায়েন 

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:৩৮

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাধারণ শিক্ষকরা। এতে করে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ঘাটাইল শাখায় বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান কমিটির মেয়াদ ও নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। 

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সমিতির কার্যালয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সভার ডাক দেন। আইন-শৃংখলার অবনতির আশঙ্কায় সমিতির সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে স্থানীয় প্রশাসন। পুলিশের এ উপস্থিতিতে কোনো পক্ষই সভা করতে পারেনি। এ নিয়ে স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষকদের একটি অংশ।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত ঘাটাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সদস্যরা দুটি ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষে রয়েছে কার্যকরী কমিটির সদস্য ও তার অনুসারীরা। অপর পক্ষে রয়েছে কমিটি থেকে পদত্যাগকারী সদস্যসহ সাধারণ শিক্ষকের বৃহৎ একটি অংশ। বর্তমান কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও অবৈধভাবে তারা ক্ষমতা দখল করে সমিতির অর্থ লুটতরাজ করে আসছে। মেয়াদউত্তীর্ণ এই কমিটির এডহক কমিটি দাবি করে ৫ ফেব্রুয়ারি সমিতির হলরুমে বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষক সমাবেশের আয়োজন করেন হুমায়ুন-অর্চনা পাল সমর্থিত শিক্ষকদের একটি অংশ। ওই সমাবেশে ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবুকে প্রধান অতিথি করা হয়। এদিকে বর্তমান কমিটির সভাপতি এমরান হোসেন একইস্থানে তাদের কার্যকরী কমিটির সভার আহবান করেন। এ নিয়ে আইন-শৃংখলা অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় দেখা দেয়। এছাড়া বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে বর্তমান কমিটির সভাপতি এমরান হোসেন কয়েক দিন আগে চার প্রধান শিক্ষক চকপাড়ার সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়ের আব্দুর রহমান, খিলগাতি সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়ের আনোয়ার হোসেন, পাকুটিয়া সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়ের রাশেদুল ইসলাম ও ঘুনি সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে দু’পক্ষকের আহুত সভা আহবান থেকে বিরত থাকতে  সভাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন স্থানীয় প্রশাসন।

একই স্থানে শিক্ষক সমিতির দু’পক্ষের সভা ডাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন। ছবি: ইত্তেফাক

সমাবেশ করতে না পেরে রোববার বিকালে ঘাটাইল প্রেসক্লাবে বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষকদের একটি পক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার চতিলা শিমলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্চনা পাল। লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ কার্যকরী কমিটি ৭২ লাখ টাকা অপচয় ও আত্মসাৎ করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, খিলগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, পাকুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম ও সাধারণ শিক্ষকরা।

একই স্থানে শিক্ষক সমিতির দু’পক্ষের সভা ডাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন। ছবি: ইত্তেফাক

এদিকে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে এমরান হোসেন বলেন, একটি বৈধ কমিটির কার্যকরী কমিটির সভা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকদের একটি অংশ অসাংগঠনিকভাবে সমাবেশের ডাক দেন। এবং হুমকির কারণে আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। সমিতির সভাপতি সম্পাদকের বিরুদ্ধে টাকা অপচয় ও আত্মসাতের অভিযোগ পুরোটাই মনগড়া।

ঘাটাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল হক বলেন, শিক্ষকদের দু’পক্ষই সভা ডাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

ইত্তেফাক/পিও