দেশের শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর তারল্যসংকট মোকাবিলা ও আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে নতুন সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ব্যাংকে আসা রেমিট্যান্সের বিপরীতে সরকার যে অর্থ প্রণোদনা দেয়, ঐ পরিমাণ অর্থ তারা ধার নিতে পারবে। একই সঙ্গে শিল্প, সেবা এবং সিএসএমএমই খাতে প্রণোদনা ঋণে সরকারের দেওয়া সুদ ভর্তুকির বিপরীতেও টাকা ধার নিতে পারবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মুদারাবাহ লিকুইডিটি সাপোর্ট (এমএলএস) নামে টাকা ধার দেওয়া হবে।
এর ফলে ইসলামী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মুদারাবাহর আওতায় ৭, ১৪ ও ২৮ দিনমেয়াদি বিশেষ তারল্যসুবিধা নিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। প্রচলিত ব্যাংকগুলোর জন্য এমন কোনো সুযোগ নেই। সংকটে পড়ার কারণে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য নতুন এ সুবিধা চালু করা হয়েছে। এর আগে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো সুকুক বন্ড রেখে টাকা ধার নিয়েছিল; কিন্তু এখন তাদের কাছে জামানত রাখার মতো পর্যাপ্ত সুকুক বন্ড না থাকায় নতুন এ সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতিমালা অনুযায়ী, ইসলামী ধারার কোনো ব্যাংক প্রবাসী আয়ের বিপরীতে যে পরিমাণ সরকারি প্রণোদনা দিয়েছে, তার ৯০ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ ধার করতে পারবে। একইভাবে শিল্প ও সেবা খাত এবং সিএসএমএমই খাতে যে প্রণোদনা ঋণ রয়েছে, তাতে সরকারের দেওয়া সুদ ভর্তুকির ৯০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ ধার করতে পারবে।
এই টাকায় মুনাফার হার হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের তিন মাসমেয়াদি মুনাফার সমান। কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা ও তার বেশি পরিমাণ টাকা ধারের জন্য ব্যাংকগুলোকে আবেদন করতে হবে। এই টাকা ধার করতে হলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে আবেদন করতে হবে। মেয়াদ পূর্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চলতি হিসাব থেকে ধারের টাকা কেটে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর তারল্যসংকট কাটাতে সুকুক বন্ডের বিপরীতে নিজস্ব তহবিল থেকে বিশেষ সুবিধা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ৩১ জানুয়ারি হাতে থাকা সব সুকুক বন্ড জমা দিয়ে ৪ হাজার ৬৫ কোটি টাকা ধার নেয় পাঁচ ইসলামী ব্যাংক।