ইংলিশ কোচ জেমি ডে ছুটিতে গিয়ে আর ফেরেননি। তাকে আর ফেরানো হয়নি। ফেরায়নি বাফুফে। তার পারফরম্যান্স দেশের ফুটবলে কিছু দিতে পারেনি। বিশেষ করে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে হতাশা। বাংলাদেশে আসার আগে জেমি ডে অন্য কোনো জাতীয় দলের দায়িত্ব পালন করেননি। ন্যাশনাল টিমস কমিটি কোথা থেকে ধরে এনে তাকে জাতীয় দলের কোচ বানিয়ে দিল। জাতীয় দলের দায়িত্ব পালনকালীন জেমি ডে পেশাদার কোচের লাইসেন্স পেতে পরীক্ষা দিল। লাইসেন্সবিহীন এক জনকে স্বীকৃত কোচ বানিয়ে দিল ন্যাশনাল টিমস কমিটি। সেই কোচে বাদ দিয়ে আবারও আরেক জনকে জাতীয় দলের কোচ নিয়োগ দেওয়া হলো। কিন্তু পুরোনো কোচ জেমি তার পাওয়া না পাওয়ায় ফিফার কাছে নালিশ করলেন।
২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ছিল ফিফার বেঁধে দেওয়া বকেয়া বেতন দেওয়ার শেষ তারিখ। কিন্তু এই তারিখের মধ্যে বকেয়া টাকা না দেওয়ায় ফিফা নাকি বাফুফের উন্নয়ন ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছে—এমন কথা লন্ডন থেকে ঢাকায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন জেমি। বাফুফে বলছে—তাদের কোনো ফান্ড বন্ধ হয়নি। এটা জেমির মিথ্যাচার। উলটো বাফুফে এখন জেমির বিরুদ্ধে ফিফায় নালিশ পাঠিয়েছে। জেমি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ফান্ড বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এসব কথা জেমি ডে কীভাবে সংবাদমাধ্যমের কাছে জানান—তা নিয়েই ফিফার কাছে নালিশ বাফুফের। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ জানিয়েছেন জেমির বকেয়া পরিশোধের বিষয়টা প্রক্রিয়াধীন। ডলারে পেমেন্টে দিতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন লাগে। বড় অঙ্কের ডলারের পেমেন্ট খুব সহজেই পাওয়া যায় না।’
২৪ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্রুয়ারি দুটি ফান্ড এসেছে বাফুফের তহবিলে। জেমি কীভাবে ফিফার ফান্ড বন্ধ হওয়ার কথাটা বলছেন—প্রশ্ন বাফুফের। জেমি বলছেন—ফিফার সিদ্ধান্তে বিপক্ষে বাফুফে আপিল করেনি। আর বাফুফে বলছে—তারা বকেয়া দিয়ে দেবে এখানে আপিলের প্রয়োজনটা কী। ৮৬ হাজার ডলার একসঙ্গে দিতে চায় বাফুফে। সোহাগ বললেন, ‘বেতন-ভাতা অপরিশোধিত থাকায় ফিফার কোনো ফান্ড আটকে নেই। এরই মধ্যে দুটি ফান্ড এসেছে বাফুফের অ্যাকাউন্টে। এভাবে মিথ্যাচার করা হলে আমরা কী করতে পারি।’ বাফুফের নীতিনির্ধারকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন জেমি।
জেমির সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল—ফিফা বাফুফের ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছে বা দিচ্ছে, এমন প্রমাণ তার কাছে থাকলে সেটা পাঠাতে। এর জবাবে জেমি বলেছেন, ‘পুরো পরিস্থিতি আমার স্টেটমেন্টে রয়েছে।’ জেমি জানিয়েছেন যদি সম্ভব হয় তাহলে যেন নিউজটা করা হয়।
জেমির সঙ্গে আগেও যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হয়েছিল বাফুফের কাছে কত টাকা বকেয়া। তখন সে প্রকাশ করেননি। তিনি আইনজীবী ছাড়া কোনো কথা বলবেন না। বাফুফেকে জিগ্যেস করতে বলেন। বাফুফেও প্রকাশ করেনি। কারণ ফিফার নিয়মের বাইরে তারা যাবে না বলে।
জেমির আমলে এশিয়ান গেমস ফুটবলে কাতারকে হারিয়ে গেমসের দ্বিতীয় পর্বে উঠেছিল। এছাড়া সাফল্য নেই। এক জন ভালো ফুটবলারের সন্ধানও দিতে না পারলেও জেমি তার জীবনের সবচেয়ে বড় অধ্যায়টি আদায় করে নিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হয়ে এবং তার কোচিং ক্যারিয়ারের সার্টিফিকেট সমৃদ্ধ করেছেন।