শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন

ঋণ বিতরণে আর্থিক প্রতিবেদন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি

আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৩:৩৬

আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও ঋণশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বা জনস্বার্থ সংস্থার নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক বছর আগে দেওয়া এ নির্দেশনা গত ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার নির্দেশনা ছিল; কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নীতিমালা শিথিল করে তা কার্যকরের সময়সীমা দুই বছর পিছিয়ে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের জন্য এক সার্কুলার জারি করা হয়। এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সিএমএসএমই খাতের অন্তর্ভুক্ত কটেজ, মাইক্রো এবং ক্ষুদ্র উপখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র জানিয়েছে, জনগণের আমানতের অর্থ নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো যেন ঋণখেলাপি না হতে পারে তার আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে মঙ্গলবার এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩-এর ৮(ছ) ধারার ক্ষমতা বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ নতুন নির্দেশনা জারি করে। কিন্তু বৈশ্বিক আর্থিক মন্দার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা কার্যকরের সময়সীমা দুই বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জনগণের স্বার্থ রয়েছে এমন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার সময় বা ঋণ হালনাগাদ করার সময় তাদের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ব্যাংকগুলোর কাছে দাখিল না করে ভিন্ন নামে অভিহিত আর্থিক বিবরণী যেমন ম্যানেজমেন্টে অডিট রিপোর্ট বা রিভিউ রিপোর্ট দাখিল করে থাকে। অথচ আইন অনুযায়ী জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে হলে আগের বছরের অডিট রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এ রিপোর্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিমুক্ত মনে হলে তবেই কেবল ঋণ দিতে পারবে। একই সঙ্গে আগের ঋণ নবায়ন করতে পারবে। এ ছাড়া কোনো নতুন ঋণ দেওয়া যাবে না, তেমনি আগের খেলাপি ঋণ নবায়নও করা যাবে না। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো কারণে খেলাপি হলে এর বহুমুখী নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে। এটা ঠেকানোর জন্যই আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে গত বছর ২২ মার্চ এ-সংক্রান্ত এক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আইনে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান বলতে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে অনুমোদন নিয়ে শেয়ার ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান, মাইক্রোডেডিট রেগুলেটরি অথরিটি থেকে অনুমোদন নিয়ে পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি, যেসব সংস্থার রাজস্ব আগের বছরে সরকারি গেজেট দিয়ে নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করেছে এমন প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে। এ ছাড়াও সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষায়িত ব্যাংক, সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ, ব্যক্তি খাতে পরিচালিত স্বেচ্ছা কার্যক্রম পরিচালনাকারী বেসরকারি সংস্থা, একই ধরনের অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে। এর বাইরে আরো রয়েছে শেয়ারহোল্ডারদের মূলধন ছাড়া মোট দায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল কর্তৃক গেজেট দ্বারা নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলে, মোট পরিসম্পদ গেজেট দ্বারা নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ন্যূনতম সংখ্যক ব্যক্তিকে নিয়োগ করলে সেই ধরনের প্রতিষ্ঠানও এর আওতায় পড়বে।

 

ইত্তেফাক/ইআ