শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আলীকদম-জালানিপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়ক

বরাদ্দের চেয়ে ৩৫ কোটি টাকা কম খরচে নির্মাণ করল সেনাবাহিনী 

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:৪০

বান্দরবান জেলায় আলীকদম-জালানিপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়ক নির্মাণের ফলে পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে এবং সেই সঙ্গে প্রসারিত হবে এ অঞ্চলের অর্থনীতি। সেনাবাহিনীর সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের আগে ২০২২ সালের ৬ জুন শেষ করেন। সড়কটি নির্মাণে অর্থবরাদ্দ ছিল ৫০৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় সংকোচন করে ৪৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকায় প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়।

সম্প্রতি ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের (১৬ ইসিবি) মেজর ও প্রকল্প কর্মকর্তা মো. ইশরাকুল হক এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। সড়কটির ১০ কিলোমিটার ভিউপয়েন্টে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বান্দরবান জেলা, লামা ও আলীকদম উপজেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। মেজর মো. ইশরাকুল হক বলেন, এ সড়ক বাস্তবায়নের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল প্রকল্প এলাকায় পর্যটন শিল্পের বিকাশকে সহজকরণ, গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়ন। এছাড়াও কৃষিজাত পণ্যের বিপণন এবং কৃষিনির্ভর শিল্পোন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করা।

সড়কটি নির্মাণের ফলে মুরুং, ত্রিপুরাসহ বৃহত্তর করুকপাতা ইউনিয়নে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবনে আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে জানিয়ে মেজর মো. ইশরাকুল হক বলেন, আলীকদম-জালানিপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়কটি ৩১৭ কিলোমিটারের সীমান্ত সড়কের সঙ্গেও সংযুক্ত হচ্ছে। দেশের ভূখণ্ড রক্ষা ও সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। সড়কটি এ অঞ্চলের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উন্নতির পাশাপাশি সুখী, সমৃদ্ধ, সুষম উন্নয়নের বাংলাদেশ গড়ার পথে এক বড় অর্জন।

ব্রিফিংয়ে আরো বলা হয়, আলীকদম উপজেলার মাথাপিছু আয় জাতীয় আয় হতে শতকরা ৩০ ভাগ কম ছিল। শিক্ষা সুবিধা ও স্থাপনার অপর্যাপ্ততার কারণে আলীকদমের দক্ষিণে বসবাসরত উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর স্বাক্ষরতার হার খুবই কম। ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডাক্তারের অপ্রতুলতার কারণে এ জনপদের মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ছিল। কুরুকপাতা ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা সদরের 

যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল খুবই নাজুক। নদীপথ ছিল একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। পাশাপাশি দুর্গম অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং নিরাপত্তা অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনায় এ সড়ক নির্মাণ ছিল অত্যন্ত জরুরি।

মেজর ইশরাক বলেন, বর্তমান সরকার পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সচেষ্ট আছে। সরকার একটি নিরাপদ টেকসই, ব্যয় সাশ্রয়ী রোড নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আলীকদম- জালানীপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়ক প্রকল্পটি একনেকে পাশ করে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়নের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৩৭.৫ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা ছাড়াও ছিল ১০টি ব্রিজ, ১১টি কালভার্ট, চারটি ভিউ পয়েন্ট। এছাড়াও ক্রস ড্রেন, সাইট ড্রেন, রিটেইনিং ওয়াল, আর্থ ওয়াটার ড্যাম, রোড সাইন এ সড়ক প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়।

ইত্তেফাক/ইআ