সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ইউক্রেন সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ পুতিনের

আপডেট : ০১ মার্চ ২০২৩, ১৩:৩৯

রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে একটি শহরে একটি ড্রোন ভূপাতিত করার পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার নির্দেশ দিয়েছেন। কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মস্কো থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার (৬০ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে কোলোমনা শহরে একটি ড্রোন বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনা রাশিয়ার প্রতিরক্ষার জন্য খুবই উদ্বেগজনক বলে মনে করা হচ্ছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বার্ষিকী হিসেবে চিহ্নিত। 

রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে একটি শহরে একটি ড্রোন ভূপাতিত করার পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এক বছর পর মস্কোর ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে একটি ড্রোন ভূপাতিত করা রাশিয়ার জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ কিনা তা সময়ই বলে দেবে। মঙ্গলবার রাশিয়ার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেখানে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট হামলার কথা উল্লেখ না করে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলেছেন। 

রাশিয়ার দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় ড্রোন হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পরই রাশিয়া সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে। রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ সেন্ট পিটার্সবার্গের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। বেশ কয়েকটি রাশিয়ান টেলিভিশন স্টেশনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কবার্তা সম্প্রচার করেছে। 

এক বছর পর মস্কোর ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে একটি ড্রোন ভূপাতিত করা রাশিয়ার জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ কিনা তা সময়ই বলে দেবে।

তবে কর্মকর্তারা ঘটনার জন্য হ্যাকিংকে দায়ী করেছেন। মঙ্গলবার রাতে ড্রোনটি ভূপাতিত করার জন্য ইউক্রেনের দুইটি অঞ্চলে রাতারাতি ড্রোন হামলার চেষ্টার জন্য মস্কোকে দায়ী করেছে। বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। তবে মস্কোর অভিযোগের বিষয়ে ইউক্রেন কোনো মন্তব্য করেনি। মস্কো অঞ্চলের গভর্নর আন্দ্রেই ভোরোবিভ, একটি টেলিগ্রাম পোস্টে লিখেছেন, মস্কোর কাছে যে ড্রোনটি ভূপাতিত করা হয়েছিল সেটি সম্ভবত একটি বেসামরিক সুবিধায় আক্রমণ করার জন্য পাঠানো হয়েছিল।

মঙ্গলবার রাতে ড্রোনটি ভূপাতিত করার জন্য ইউক্রেনের দুইটি অঞ্চলে রাতারাতি ড্রোন হামলার চেষ্টার জন্য মস্কোকে দায়ী করেছে।

মস্কো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে গুবাস্তোভো গ্রামের কাছে রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় জ্বালানি সংস্থা গ্যাজপ্রমের একটি কারখানা রয়েছে। সেখানে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়। তবে গ্যাজপ্রম জানিয়েছে, তাদের কার্যক্রম ব্যাহত হয়নি।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কিয়েভ কর্তৃপক্ষ ক্রাসনোদর ও অ্যাডিজিয়া অঞ্চলে বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে রাতে ড্রোন হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম দ্রুত আক্রমণ পাল্টে দেয়। হামলা ব্যর্থ হওয়ায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। দুইটি ড্রোনই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মাঠে অবতরণ করে। 

মস্কো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে গুবাস্তোভো গ্রামের কাছে রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় জ্বালানি সংস্থা গ্যাজপ্রমের একটি কারখানা রয়েছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ক্রিমিয়া থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে ক্রাসনোদর অঞ্চলে একটি তেলের ডিপোতে আগুন লেগেছে। এর আগে সেখানে আকাশে ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। স্থানীয় রুশ কর্তৃপক্ষের মতে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইউক্রেন সীমান্তে ও দেশের অভ্যন্তরে অনেক এলাকায় ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। 

আন্দ্রেই ভোরোবিভ জানান, ড্রোনটি কোনো ক্ষতি করেনি। তিনি ড্রোনটিকে ইউক্রেনীয় বলে শনাক্ত করেননি। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, এটি সম্ভবত বেসামরিক অবকাঠামো আক্রমণ করার জন্য পাঠানো হয়েছিল।

ক্রিমিয়া থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে ক্রাসনোদর অঞ্চলে একটি তেলের ডিপোতে আগুন লেগেছে।

ড্রোনটির যে ছবিগুলো সামনে এসেছে তা ইউক্রেনীয় বলে মনে হচ্ছে। এটির সীমা ৮০০ কিলোমিটার (প্রায় ৫০০ মাইল) পর্যন্ত রয়েছে তবে এটি বড় বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম নয়।

ইত্তেফাক/ডিএস