গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ দোকান উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এমন সুন্দর, সবুজ ও বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস তাদের প্রাণের দাবি। প্রক্টরিয়াল টিম সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তাদের এই উচ্ছেদ অভিযান। উচ্ছেদ অভিযানের আগে নিয়মিত ৩৫০ থেকে ৪০০ দোকান বসত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়, তবে এখন শূন্যের কোঠায় ভ্রাম্যমাণ দোকান। দোকান না থাকায় বহিরাগতও নেই। তাদের এই উচ্ছেদ অভিযানকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, লাইব্রেরি, হাকিম চত্বর, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ও বিশ্ববিদ্যালয় আশপাশের এলাকায় কোনো ভ্রাম্যমাণ দোকান নেই। বহিরাগত মানুষের আনাগোনাও প্রায় শূন্যের কোঠায়। সন্ধ্যা ও মধ্যরাতে টিএসসি ও ভিসি চত্বর ঘুরে কোনো ভ্রাম্যমাণ দোকানের দেখা মেলেনি। মধ্যরাতে ভিসি চত্বর ও টিএসসিকে দেখা যায় ভিন্ন এক চিত্রে, নেই কোনো হই-হুল্লোড়, নেই বহিরাগতদের চলাফেরা। মধ্যরাতেই কথা হয় ভিসি চত্বরে বসে থাকা কয়েক জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল ভূমিকায় তারা সন্তুষ্ট।
এই বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ভ্রাম্যমাণ দোকানের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যূনতম পরিবেশ রক্ষা হয়নি। এতদিন এক জন শিক্ষার্থীর পড়াশোনার পাশাপাশি চাইলেও ক্যাম্পাসে ঘুরাঘুরির সুযোগ ছিল না। এমন পরিবেশ হয়ে গিয়েছিল, যা কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না। সেই জায়গা থেকেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছি ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো উচ্ছেদ করার জন্যে।
প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস পরিচালনায় সহায়তার জন্য সব শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। আমার শিক্ষার্থীরা আমাকে একটি সুন্দর ক্যাম্পাস গড়তে সহায়তা করছে, এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস গড়তে যা যা করা প্রয়োজন সেটি অব্যাহত থাকবে।
২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আরিফ বিল্লাহ জানান, এখন সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে বের হয়ে হাঁটি। মনে হয় ক্যাম্পাসটা আমাদের।
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এমনি হওয়া উচিত যেখানে শিক্ষার্থীরা পরিচ্ছন্ন ও সবুজ আঙিনায় ঘুরে বেড়াবে। ক্যাম্পাস সুন্দর রাখতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণও প্রয়োজন। শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যৌথ অংশগ্রহণে আমরা একটি সুন্দর ও পড়াশোনার উপযোগী ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে পারব।