সাভারের আশুলিয়ায় ৮ বছরের মাদ্রাসা শিক্ষার্থী তানভীর আহম্মেদের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে র্যাব। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান। বুধবার র্যাব-৪ এর একটি দল আশুলিয়া থানাধীন টংগাবাড়ী এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা আনোয়ারসহ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আনোয়ার হোসেন (২০), সাকিব হোসেন (২৬) ও তামজিদ আহমেদ রাফি (১৪)। তারা সকলেই ঢাকা জেলার বাসিন্দা।
র্যাব জানায়, গত ৭ মার্চ শবে বরাতের রাতে আশুলিয়ার টংগাবাড়ী এলাকায় থেকে মাদ্রাসা পড়ুয়া ৮ বছরের শিশু শিক্ষার্থী তানভীরকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। পরের দিন অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি শিশুটির বাবার মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ দাবিসহ হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় নিখোঁজ শিশুটির বাবা নিরুপায় হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এবং র্যাব-৪ বরাবরও অভিযোগ দায়ের করেন। র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল ঘটনাটি তদন্তের পাশাপাশি ও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। এরই মধ্যে টংগীবাড়ী এলাকায় একটি বস্তাবন্দী শিশুর লাশ দেখতে পেয়ে থানায় অবহিত করে স্থানীয়রা। বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-৪ এর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজ শিশু তানভির আহম্মেদের লাশ সনাক্ত ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে মূলহোতাসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা অপহরণ, মুক্তিপন দাবি ও হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খাঁন বলেন, নিহত শিশুটির পরিবার ও হত্যাকারীরা একই এলাকায় বসবাস করার সুবাদে একে অপরের পূর্ব পরিচিত। হত্যাকাণ্ডের মুলহোতা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে শিশুর বাবা টঙ্গাবাড়ি কেন্দ্রিয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন সোলায়মানের দীর্ঘ দিন ধরে পাওনা টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে শিশুটির পিতা সোলায়মান দ্রুত টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আনোয়ারকে বকাবকি করলে সে অপমান বোধ করে এবং সোলায়মানের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার শিশু ছেলে তানভিরকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে গত ৭ মার্চ রাতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি আনোয়ার ও তার সহযোগীরা শিশু তানভিরকে সুকৌশলে তার বাবার সদ্য কেনা জমি দেখানোর কথা বলে আশুলিয়া থানাধীন শ্রীখন্ডিয়া এলাকায় রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় চেপে ধরে। একপর্যায়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশটি সেখানেই ফেলে রেখে হত্যাকারীরা নিজেদের বাসায় ফিরে আসে। এরপর ৮ মার্চ ভোরে হত্যাকারীরা ভুক্তভোগী শিশুটির লাশ গুম ও হত্যার প্রমাণ লুকানোর জন্য একটি বস্তায় ভরে লাশটি সবজির গাড়িতে করে আশুলিয়ার টংগাবাড়ী এলাকায় রাস্তার পাশে ময়লার ড্রেনে ফেলে দেয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।