বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৫ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

প্রত্যেক বাংলাদেশিকে কথাটা বলতে চাই: ইন্দ্রজিৎ মজুমদার

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, ১৯:১০

টলিউডের অভিনেতা ইন্দ্রজিৎ মজুমদার। সদ্য মুক্তি পাওয়া পরিচালক ফখরুল আরেফিন খানের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সিনেমা ‘জেকে ১৯৭১’-এ অভিনয় করেছেন তিনি। বিমান ছিনতাইকে কেন্দ্র করে এই সিনেমায় একজন দোভাষী চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই অভিনেতা। ছবিটি মুক্তির দিনে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। এসময় সিনেমাসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ইত্তেফাক অনলাইনের সঙ্গে।

‘জেকে ১৯৭১’ মূলত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা। কলকাতার অভিনেতা হয়ে এই সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?
‘জেকে ১৯৭১’ সিনেমাটি বাংলাদেশ-ভারত’র মিলিত প্রয়াস। সেই জায়গা থেকে পরিচালক ফখরুল আরেফিন ভাই যখন কলকাতায় অভিনয়শিল্পী খুঁজছিলেন, তখন ওনার ইউনিটের একজন মেয়ে, যার সঙ্গে আমার আগে থেকে পরিচয় ছিল, চেনা-জানা ছিল। তিনি আমাকে প্রথম এই সিনেমার কথা বলেন। এরপর আরেফিন ভাইয়ের সঙ্গে বিস্তারিত কথা হয়। সে থেকেই শুরু।

ইন্দ্রজিৎ মজুমদার

এই সিনেমার জন্য আপনাকে আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়েছে?
আলাদা প্রস্তুতি বলতে সেরকম কিছু না, তবে প্রত্যেকটি চরিত্রের জন্য কিছু না কিছু প্রস্তুতি থাকেই। এছাড়া আরেফিন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে নিজের মত করে একটা চরিত্র নির্মাণ করেছিলাম। যেটার জন্য বেশি প্রস্তুতি ছিল সেটা হলো ভাষা। এখানে ইংরেজি, ফ্রান্স ভাষা আছে। ইংরেজি জানা থাকলেও ফ্রান্স ভাষার সঙ্গে আমি মোটেও পরিচিত ছিলাম না। একজন ভাষা প্রফেসর ছিলেন, তিনি পুরোটা আমাদের দু’জনকে গাইড করেছেন। ওনার সঙ্গে কিছুদিন ওয়ার্কশপ করে যতটা পেরেছি জিনিসটাকে একটা পর্যায়ে এনেছি।

‘মুক্তিযুদ্ধ’ শব্দটি বাংলাদেশিদের কাছে ভীষণ আবেগের নাম। যখন শুনলেন এমন বিষয় নিয়ে সিনেমাতে অভিনয় করছেন। তখন অনুভূতি কী ছিল?
ডেফিনেটলি ভালো লেগেছে। ছোটবেলা থেকে মুক্তিযুদ্ধের অনেক গল্প শুনেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গল্প শুনেছি, গান শুনেছি। কারণ আমাদের বাড়িতে সেই কালচারটা ছিল। যেহেতু আমার অরিজিনটা বাংলাদেশ থেকে। তো সেই জায়গা থেকে যখন বুঝতে পারলাম আমি এরকম একটি সিনেমা করছি তখন অন্যরকম একটা অনুভূতি তো অবশ্যই হয়েছে।

‘জেকে ১৯৭১’ সিনোমর পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে এসে দর্শকদের সঙ্গে সিনেমাটি দেখলেন, কেমন লাগলো?
খুব ভালো লেগেছে। হয়তো এ জন্যই ‘কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে’ সিনেমাটি দেখা হয়নি। সেদিন খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। সম্ভবত স্রষ্টার ইচ্ছে ছিল- যে প্রেক্ষাপটে, যে ভূমিতে সিনেমাটি তৈরি, সেখানে এসে সিনেমাটি দেখি। এখন সেই দুঃখও চলে গেছে।

এরপর বাংলা ছবিতে অভিনয় করার ইচ্ছা আছে?
একদম। প্রস্তাব পেলে দৌড়ে দৌড়ে চলে আসবো। প্লেন ছাড়াই চলে আসবো।

কলকাতায় ঢাকার কাজের মার্কেট চাহিদা কেমন? একজন অভিনেতা হিসেবে আপনার কাছে জানতে চাই...
শিল্প এমন একটা জিনিস যেটা সব সময় আপগ্রেডেশন হতে থাকে। সেটা কলকাতাতেও আপগ্রেডেশন হচ্ছে। ঢাকা আগের থেকে অনেক বেশি আপগ্রেডেশন হয়েছে। প্রত্যেক বাংলাদেশিকে বলতে চাই- আপনাদের এখানকার ওটিটি, সিনেমা, নাটক এবং টেলিভিশন সিরিয়ালের ভালো কাজগুলোর পশ্চিমবঙ্গে একটি আলাদা বাজার তৈরি হয়েছে। আমাদের ওখানকার দর্শক কিন্তু সেটা দেখতে প্রচণ্ড রকমের ইচ্ছুক। তারা এখানকার নতুন ওটিটি কন্টেন্ট ও ছবির জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকেন।

‘জেকে ১৯৭১’ সিনেমার একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

দুই দেশের ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পার্থক্য কী?
পার্থক্য আছে প্রচুর। সেভাবে বলতে গেলে একটা রচনা হয়ে যাবে। আমার মনে হয় প্রার্থক্য থাকা উচিত। কারণ প্রত্যেকেরই একটি রূপ-কালচার থাকে। সেই জায়গা থেকে পার্থক্য থাকা ভালো। আমি যেটা বলছিলাম সেটা হল- টেকনিক্যাল আপগ্রেডের কথা। শিল্পের জন্য সেই আপগ্রেডেশন চলতেই থাকবে।

বাংলাদেশের কার কাজ আপনার ভালো লাগে?
আমি ‘মহানগর’-দেখে মুগ্ধ হয়েছি। এই সিরিজ দেখে আমি মোশাররফ করিমের বড় ভক্ত হয়ে গেছি। এছাড়া জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয় ভালো লাগে।

ইত্তেফাক/বিএএফ