শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৭ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

বুশকে জুতা মারার জন্য অনুতপ্ত নন সেই সাংবাদিক

আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৩, ১৯:৪৪

২০০৮ সালে ইরাকের রাজধানী বাগদাদ সফরে যান যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। ১৪ ডিসেম্বর বাগদাদে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন তিনি। সেখানে মুনতাজার আল–জাইদি নামের এক ইরাকি সাংবাদিক তাকে জুতা ছুড়ে মারেন এবং গালি দেন। তখন ইরাকের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে কর্মরত ছিলেন তিনি। বুশের এই সফর ঘিরে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও এ ঘটনা ঘটে। যা  বিশ্বজুড়ে শোরগোল সৃষ্টি করে।   

এ ঘটনার এক যুগের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এমনকি ইরাকে মার্কিন হামলা শুরুর দুই দশক পেরিয়ে গেছে। এত সময় পরও বুশের প্রতি ক্ষোভ পুষে রেখেছেন জাইদি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ও  ইরাকি রাজনীতিকদের প্রতিও মনের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে তার। সম্প্রতি তিনি জনান, বুশকে জুতা ছুড়ে মারা নিয়ে মোটেই অনুতপ্ত নন তিনি।

এ বিষয়ে জাইদি বলেন, ২০ বছর আগে আগ্রাসনকারীদের হাত ধরে যারা ক্ষমতায় এসেছিলো, তারা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। দুর্নীতির সাগরে ডুবেছে। এরপরও তারা ক্ষমতায় রয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র খুব ভালো করেই জানে, ওই সময় তারা ভুয়া রাজনীতিকদের ক্ষমতায় নিয়ে এসেছিল।

তিনি আরও  বলেন, ‘ওই ঘটনা প্রমাণ করে, সাধারণ মানুষ চাইলে একজন চরম অহংকারী মানুষকেও সর্বশক্তি দিয়ে “না” বলতে সক্ষম। আমি তাকে (বুশ) বলতে পেরেছি, তুমি ভুল কাজ করেছ।’

আরব সংস্কৃতিতে কাউকে জুতা ছুড়ে মারাকে ‘চরম অপমান’ বিবেচনা করা হয়। জর্জ ডব্লিউ বুশকে অপমান করতে ঠিক এই কাজটিই করেছিলেন সাংবাদিক জাইদি। 

চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘কুকুর, এটা আপনার জন্য ইরাকিদের পক্ষ থেকে বিদায়ী চুমু।’ ওই সময় বুশের ঠিক পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ইরাকের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নুরি আল–মালিকি।

জর্জ বুশকে জুতা ছুড়ে মারার কারণে গ্রেপ্তার হন জাইদি। ছয় মাস কারাগারে থাকতে হয় তাকে। পরে মুক্তি পেয়ে দেশ ছেড়ে লেবাননে পাড়ি জমান। যদিও ২০১৮ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে ইরাকে ফেরেন জাইদি। ইরাকে চলমান লাগামহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে ভোটে দাঁড়ান তিনি। কিন্তু জিততে পারেনি।

ইরাকে আগ্রাসন চালানোর জন্য বুশ তখন ইরাকিদের কাছে চরম নিন্দিত ব্যক্তি। সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত ও হত্যা এবং গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগ এনে ইরাকে আগ্রাসন চালানোয় বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হন তিনি। জাইদিও ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি।  পরে এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে জর্জ বুশের সংবাদ সম্মেলনে।  

 

 

ইত্তেফাক/এফএস/এসআর