যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনোভ কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন ড্রোনের উপস্থিতিকে 'উস্কানিমূলক' বলে অভিহিত করেছেন। ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে তিনি এ কথা বলেন। রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যম তাসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আনাতোলিকে তলব করে ওয়াশিংটন। আনাতোলি ইউরোপ ও ইউরেশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যারেন ডানফ্রিডের সঙ্গে দেখা করেন।
ড্রোন শনাক্ত করার পর ক্যারেন 'অনিরাপদ ও পেশাগত' প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন, ওয়াশিংটন এই কারণে ড্রোন হারিয়েছে। আনাতোলি এই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, 'এই ঘটনাকে আমরা উসকানিমূলক বলে মনে করি।'
বৈঠকে ক্যারেনকে আনাতোলি জানান, মার্কিন ড্রোন, বিমান ও জাহাজের রুশ সীমান্তের এত কাছে আসার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তিনি প্রশ্ন করেন, 'নিউইয়র্ক বা সানফ্রানসিসকোতে এমন একটি ড্রোন হাজির হলে মার্কিন মিডিয়া বা পেন্টাগনের প্রতিক্রিয়া কি আপনি কল্পনা করতে পারেন?'
আনাতোলি ক্যারেনের সঙ্গে বৈঠককে 'গঠনমূলক' বলে অভিহিত করেছেন এবং জানিয়েছেন, উভয় পক্ষই তাদের উদ্বেগ একে অপরকে জানিয়েছিল। পূর্ব ইউরোপে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে 'অত্যন্ত সতর্ক' হতে হবে। মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে 'বাস্তববাদী সম্পর্ক' চায়, সংঘাত নয়।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) ইউএস ইউরোপীয় কমান্ডের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার কৃষ্ণ সাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমার উপর দিয়ে দুটি রাশিয়ান এসইউ-২৭ বিমান এবং একটি মার্কিন রিপার ড্রোন উড়ছিল। রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রোনের ওপর উড়ে যায় এবং কয়েকবার মনুষ্যবিহীন ড্রোনের ওপর জ্বালানি ফেলে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, রাশিয়ান এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান দুইটি ইচ্ছাকৃতভাবে এমকিউ–৯ রিপার ড্রোনের 'প্রপেলারে' আঘাত করেছে। ফলে মার্কিন বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত ড্রোনটিকে কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। ড্রোনটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় শান্তিপূর্ণ অভিযানে নিয়োজিত ছিল।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এই ইউএভি (মানব বিহীন উড়ন্ত যান) অপ্রত্যাশিতভাবে বেশ কয়েকবার গতিপথ পরিবর্তন করে এবং রুশ যুদ্ধবিমান ২টি একবারও এই 'ইউএভির সংস্পর্শে আসেনি'।
আনাতোলি উল্লেখ করেন, এই ড্রোনগুলো বিভিন্ন ধরনের মিসাইল ও বোমা বহন করতে সক্ষম। ইউক্রেন সরকারকে গোয়েন্দা তথ্য এবং সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা সরবরাহ করতে যুক্তরাষ্ট্র এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সীমান্তে গুপ্তচর বিমান ও ড্রোন উড়িয়েছে। এছাড়াও অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অর্থ প্রদান করে। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে আসছে, তারা সংঘাতে অংশ নিচ্ছে না।
কোনো পক্ষই ড্রোনের ঘটনার সঠিক অবস্থান প্রকাশ করেনি। তবে রাশিয়ান মিডিয়া অনুসারে, রিপার ড্রোনটির শেষ অবস্থানটি সেভাস্তোপল ক্রিমিয়ান বন্দর থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ছিল।