শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৮ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

আমার মা আমাদেরকে মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছেন: শেখ পরশ

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৩, ১৫:৪০

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, আমার মা জানতেন, আমার বাবার প্রতি আঘাত আসতে পারে এবং একাধিক বার বাবাকে হত্যা চেষ্টাও করা হয়েছে। আমার মা সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আমার বাবার জীবনে সেই দুঃস্বপ্ন যেন বাস্তবে পরিণত না হয় সে জন্য তিনি সর্বদা সতর্ক থাকার চেষ্টা করতেন, ভয়ে ভয়ে চলতেন। এ জন্যই তিনি আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এম এ পরীক্ষা দিয়েছিলেন। আমার মা বরিশালের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। আমার না ছিলেন আব্দুর রব সেরনিয়াবাত। বরিশাল বিভাগসহ সারাদেশের মানুষ তাকে একজন অত্যন্ত সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে চিনতেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যারা গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন তারা তাদের বাকি জীবনে অত্যন্ত কষ্ট নিয়ে কাটিয়েছেন। ছাত্র বয়সে রাজনীতি করেছেন, বরিশাল মহিলা কলেজের জি এস ছিলেন। আমার শানু মামী ভিপি ছিলেন। কিন্তু আমার মায়ের কোন লোভ লালসা ছিল না। বিয়ের পরে সংসারে মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে মানুষকে ভালবাসা আর মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছেন। 

বুধবার (১৫ মার্চ) সকালে শহীদ শেখ ফজলুল হক মণির সহধর্মিণী শহীদ আরজু মণি সেরনিয়াবাতের ৭৭তম জন্মদিনে বনানী কবরস্থানে যুবলীগের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন। এসময় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, রাতে যে গান শুনিয়ে আমাদেরকে ঘুম পাড়াতেন সেটাও ছিল মানবতার গান। একদিন বড় হলে তোমরা মানুষের মত মানুষ হবে, দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াবে, মায়ের সাথে আমাদের স্মৃতি এতটুকুই। আমরা চেষ্টা করছি মানুষের মত মানুষ হওয়ার, দুঃখী মানুষের পাশে থাকার। তিনি আরও বলেন, আমার বয়সী অনেকেরই মা আছে, তারা মা বলে ডাকে, মায়ে সেবা করার সুযোগ পাচ্ছেন, কিন্তু আমরা তো মায়ের সেবা করার সুযোগ পাচ্ছি না। ইচ্ছে করে মায়ের সেবা করতে, মা কে ভালবাসতে, মায়ের কাছে যেতে। আমরা সে সুযোগ পাই নাই। আজকে মানবাধিকারের কথা বলে অনেকে। আসলে ব্যাপারটা অবান্তর ও হাস্যকর মনে হয়। 

তিনি বলেন, আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-পঁচাত্তরে আমাদের কোন অধিকার ছিল না। কি দোষ ছিল বেবি খালার, কি দোষ ছিল আরিফ মামার, কি দোষ ছিল শেখ রাসেলের, কি দোষ ছিল আমার মায়ের। আমরা তো সেই অধিকার কোন দিনও পাই নাই। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়ে ছিলেন বলে ২১ বছর পর গুলি, বারুদ, বোমা হত্যা চেষ্টা, আমাদের নেতা-কর্মীদের হত্যা, তাদের উপর অত্যাচার-জুলুমের পরেও ক্ষমতায় এসে বিচারের পথ সুগম করেন তিনি। তার সাহসী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা ১৫ আগস্টের বিচার পেয়েছি। ন্যায় পরায়ণতার প্রতীক জননেত্রী শেখ হাসিনা, তার সাহসী নেতৃত্বের করনেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমাদের পরিবার সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্যই সংগ্রাম করেছে। আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলে, মানবতার কথা বলে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তাদের ভূমিকা কি ছিল? আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য কি করেছেন? মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যেই এগুলো পড়ে। আমরা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলাম।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান পবন, মোঃ নবী নেওয়াজ, মোঃ এনামুল হক খান, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মোঃ জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মুহাম্মদ বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক, ডা: হেলাল উদ্দিন, মোঃ সোহেল পারভেজ, মশিউর রহমান চপল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

ইত্তেফাক/এমএএম