বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

প্রয়োজনে সাকিব ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে: ডিবি

আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৩, ১৭:৪৪

পুলিশ খুনের মামলার আসামি সংযুক্ত আরব আমিরাতে করেছেন সোনার দোকান। সেই দোকান উদ্বোধন করতে যাওয়া ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমকে তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডিবিপ্রধান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ‘সোনার দোকানের মালিক আরাভ খান পুলিশ খুনের আসামি। বিষয়টি জানানো হয়েছিল সাকিবকে। কিন্তু তিনি দুবাইয়ে কেন গেলেন! এটি দুঃখজনক।’ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির প্রধান এসব কথা বলেন।

ডিবিপ্রধান বলেন, ‘আমাদের পুলিশের একজন মেধাবী কর্মকর্তা ছিলেন পরিদর্শক মামুন। তাকে শুধু হত্যাই করেনি, মরদেহ যেন না পাওয়া যায় তাই কালীগঞ্জের জঙ্গলে ফেলে দিয়েছিল। এ ঘটনার পর মামলা হয়। ডিবি তদন্ত করেছে। আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম পালিয়ে গেলেও নকল একজন আসামি জেলখানায় দেন। পরবর্তীসময়ে ডিবির তদন্তে নকল আসামির ঘটনা সামনে আসে। এর মধ্যে মূল আসামি দুবাইয়ে সোনার দোকানের মালিক রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ভারতে পালিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি ভারতীয় পাসপোর্টে দুবাই যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম একজন খুনি। একজন মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তাকে খুন করেছেন। মিডিয়ায় ও অনেকের বলার পরও সাকিবসহ অন্য তারকারা খুনের মামলার আসামির ডাকে দুবাইয়ে গেছেন। তার সোনার দোকান উদ্বোধনে যোগ দিয়েছেন।’

আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে ইন্টারপোলের সহায়তায় রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো, যোগ করেন ডিবিপ্রধান।

তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কতগুলো মামলার অভিযোগ রয়েছে জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আসামির বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১২টা ওয়ারেন্ট রয়েছে। মামলা রয়েছে, চার্জশিট রয়েছে তার বিরুদ্ধে।’

আরাভ খানই রবিউল, ডিবি কখন বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যখন কোনো মামলার চার্জশিট প্রদান করা হয় তখন আসামিরা কে কোথায় আছেন, তা খোঁজখবর নেওয়া হয়। আরাভ খানের বিভিন্ন ছবি প্রকাশ হয়। সাকিব আল হাসান টেলিভিশন ও ফেসবুকে ওই সোনার দোকান উদ্বোধনের বিজ্ঞাপন দিচ্ছিলেন। সবকিছু মিলেই আমরা তথ্য পায় আরাভ খানই পুলিশ খুনের মামলার আসামি রবিউল ইসলাম।’

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ‘খুনের পর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম ধারণ করেন রবিউল ইসলাম। ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে তিনি এখন দুবাইতে অবস্থান করছেন। ক্রিকেটার সাকিব অথবা অন্য যারা গিয়েছেন, ডিবি কারো সঙ্গে কথা বলেছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, সাকিবসহ অন্যদেরও জানানো হয়েছে। জানানোর পরও তারা কেন পুলিশ খুনের মামলার আসামির ডাকে দুবাই গেলেন এটি আমি জানি না।’

সাকিব আল হাসান ও দীঘি। ছবি: সংগৃহীত

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি ফ্ল্যাটে খুন হন পরিদর্শক মামুন। তাকে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম ভারতে পালিয়ে যান। এই মামলায় ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল গোয়েন্দা পুলিশ রবিউলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়। পুলিশ হত্যার মামলায় রবিউলের ভাড়া করা এক ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করে ৯ মাস জেল খেটে বের হন!

২০২০ সালে রবিউল ভারতীয় পাসপোর্ট পান। যাতে তার নাম বদলে লেখা হয় ‘আরাভ খান’। সেখান থেকে চলে যান দুবাই। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আরব আমিরাত সরকার তাকে রেসিডেন্ট পারমিট দেয়। রবিউল এখন সেখানেই আছেন, জুয়েলারি ব্যবসা করছেন। বুধবার (১৫ মার্চ) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ‘আরাভ জুয়েলার্স’ উদ্বোধন করা হয়।

ইত্তেফাক/এনএ