বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৫ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

স্বপ্নবাজ তরুণদের নিয়ে কাজ করতে চাই: জসিম আহমেদ

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৩, ১৬:৫৪

চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক জসিম আহমেদ। কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোট গল্প অবলম্বনে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমা ‘মায়ার জঞ্জাল’ মুক্তি পেয়েছে দেশের প্রেক্ষাগৃহে। তিন সপ্তাহ ধরে চলছে সিনেমাটি। সম্প্রতি ‘মায়ার জঞ্জাল’ ও নিজের কাজ নিয়ে কথা বলেছেন ইত্তেফাক অনলাইনের সঙ্গে।

দেশের প্রেক্ষাগৃহে তো মুক্তি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী ‘মায়ার জঞ্জাল’ কবে নাগাদ মুক্তি পেতে পারে?
আমরা নর্থ আমেরিকা, কানাডা, ইউকে, ইউএই মুক্তি নিয়ে কাজ করছি। আশা করি জুন-জুলাই নাগাদ একটু বড় আকারেই মুক্তি দিতে পারবো।

ছবি: সংগৃহীত

প্রযোজনা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা-ভাবনা আছে?
তিন সপ্তাহ তো এমন কোন বড় সময় না। এই ছবি দেখে দর্শক যে রকম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বা প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তাতে ছবিটা অন্তত ৩ মাস থিয়েটারে চলার আশা আমরা করতেই পারতাম। তবে ঢাকার বাস্তবতা ভিন্ন। এই ধরনের ছবি যারা দেখতে চান তাদের কর্মব্যস্ত সময়ে হলে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে ট্রাফিক জ্যামে যেভাবে রাস্তায় আটকে থাকতে হয়, হলে পৌঁছাতেই শো অর্ধেক শেষ হয়ে যায়। এমনও দেখা গেছে অনেকেই একাধিক দিনে চেষ্টা করে সময়মত হলে পৌঁছাতে পেরেছেন। এমন যুদ্ধ করে ছবি দেখতে যাওয়া কারো কাছে বিলাসিতার মত মনে হতে পারে।

অন্য দেশের সিনেমা খুব সহজেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে যায় কিন্তু আমাদের দেশের সিনেমা সেভাবে পৌঁছাতে পারে না। এটার কারণ কি?
এই প্রশ্নের সঙ্গে মোটেও একমত নই। আমাদের অনেক মেধাবী নির্মাতা-প্রযোজক আছেন। প্রতিবছরই আমাদের অনেক ছবি আন্তর্জাতিক ফেস্টিভ্যালে যাচ্ছে, প্রতিযোগিতা করছে, প্রশংসিত হচ্ছে এবং পুরস্কারও পাচ্ছে। আপাতত এই সংখ্যাটা অনেক বেশি না হলেও বিশ্ব সিনেমায় আমাদের অস্তিত্ব জানান দেওয়া যাচ্ছে। ওই যে বললাম না, নির্মাতাদের মধ্য থেকে যত বেশি প্রযোজক বাড়বে, এই সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।

জসিম আহমেদ

আমাদের দেশে সিনেমা হল সংকট। প্রযোজক হিসেবে এই বিষয়টাকে কীভাবে দেখেন? কোন দিকে জোর দিলে এই সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে বলে মনে করেন?
এই সমস্যা সিনেমা নির্মাণের জন্য একটা বড় বাধা। তার চেয়ে বড় বাধা হলো- সিঙ্গেল স্ক্রিন থেকে টাকার হিসাব না পাওয়া। এমনকি পরিবেশনার সামান্য যে খরচ হয়, সেই টাকাও সিঙ্গেল স্ক্রিন থেকে আসে না। তাহলে এসব হলে সিনেমা দিয়ে বিশাল একটা হল সংখ্যায় ছবি মুক্তির খবর আর ভুয়া সুপার হিটের তকমা লাগানোর উদ্দেশ্য কী? তার চেয়ে এসব হলে ছবি না দেওয়াই ভালো, যেমনটি আমরা দিচ্ছি না। তার ওপর আছে পাইরেসির ভয়। হল সংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে এগুলোকে একটা সিস্টেমে আনা দরকার। দিন শেষে সিনেমা তো একটা ব্যবসা, চ্যারিটি না।

পরবর্তী কাজ নিয়ে কি ভাবছেন?
ইতোমধ্যেই অন্য আরেকটি ফিচার ফিল্মের কাজ শেষ হয়েছে। জেভলাপমেন্ট পর্যায়ে আরও কিছু কাজ আছে। তবে দেশের নতুন ট্যালেন্টদের নিয়ে কাজ করার একটা পরিকল্পনা এবং স্বপ্ন আছে। বাংলাদেশ ফিকশন ল্যাব নামে একটি প্রকল্প চালু করা। যেখানে প্রথম বা দ্বিতীয় ফিচার ফিল্মের আইডিয়া নিয়ে তরুণ নির্মাতারা আসবেন। সেখান থেকে বাছাই করা সেরা ৫টি ছবির ডেভলপমেন্ট আমরা করবো। পরবর্তীতে সেই ছবিগুলো দেশে বিদেশে নিয়ে যাবো। প্রযোজনাও করবো। এই প্রজেক্টের ভালো দিক হতে পারে দেশের স্বপ্নবাজ তরুণদের তুলে আনা যারা নিজের ছবি নিজের মত করে বানাতে গিয়ে যুদ্ধ করছেন। এভাবে প্রতি বছর কিছু ভালো ছবি হলে একটা সময় দেখা যাবে বিশ্ব চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের সিনেমার একটা শক্ত অবস্থান তৈরি হবে। আমাদের দেশেও এই ধরনের সিনেমা দেখার দর্শক সৃষ্টি হবে।

জসিম আহমেদ

ইত্তেফাক/বিএএফ