শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

'যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনের পুনর্গঠনে খরচ হবে ৪১১ বিলিয়ন ডলার'

আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৩, ১২:২৪

যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনের পুনর্গঠনে আগামী ১০ বছরে ৪১১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক সংস্থাটি জানিয়েছে, শুধু বিধ্বস্ত শহর থেকে ধ্বংসস্তূপ অপসারণে ব্যয় হবে ৫ বিলিয়ন ডলার। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন সরকার, বিশ্বব্যাংক, ইউরোপীয় কমিশন ও জাতিসংঘ যৌথভাবে এই মূল্যায়ন তৈরি করেছে। বুধবার (২২ মার্চ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যতদিন যুদ্ধ চলবে, ততদিন চাহিদা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনের পুনর্গঠনে আগামী ১০ বছরে ৪১১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক।

গত সেপ্টেম্বরে ব্যাংকটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ইউক্রেনের পুনর্গঠনে আনুমানিক ৩৪৯ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। প্রতিবেদনে যুদ্ধের কিছু অর্থনৈতিক ও মানবিক ব্যয়ের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। 

এতে বলা হয়, ২০ লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রতি পাঁচটি জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে একটির বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৬৫০টি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত বা চুরি হয়েছে। এছাড়া, যুদ্ধে ৪৬১ শিশুসহ অন্তত ৯ হাজার ৬৫৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের পুনর্গঠনে আনুমানিক ৩৪৯ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।

ইউক্রেনের পুনর্গঠনে কয়েক বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট আনা বিজর্দে। প্রতিবেদনে ভবন ও অবকাঠামোর সরাসরি ক্ষতির পরিমাণ ১৩৫ বিলিয়ন ডলার বলে ধারণা করা হয়েছে। 

কিন্তু বছরের পর বছর ধরে চলা সংঘাতের ফলে যে বৃহত্তর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে তা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। বিজর্দে বলেন, 'ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রতিরোধ না করলে ক্ষয়ক্ষতি আরও বেশি হতে পারত। ডোনেৎস্ক, খারকিভ, লুহানস্ক ও খেরসন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।'

ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রতিরোধ না করলে ক্ষয়ক্ষতি আরও বেশি হতে পারত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিনিয়োগ পুনরুদ্ধারের জন্য ২০২৩ সালে কিয়েভের প্রয়োজন ১৪ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মঙ্গলবার (২১ মার্চ) জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের সঙ্গে প্রায় ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের চার বছরের অর্থায়ন প্যাকেজের বিষয়ে কর্মী পর্যায়ের একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে।

বিশ্বব্যাংক ফেব্রুয়ারিতে জানিয়েছিল, ইউক্রেনের সরকার স্কুল ও হাসপাতাল খোলা রাখা, শিক্ষক ও বেসামরিক কর্মচারীদের বেতন প্রদান এবং পেনশন প্রদানসহ প্রয়োজনীয় সরকারী সেবা বজায় রেখেছে। আনা বিজর্দে সে সময়ে জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনের এই পরিষেবাগুলো বজায় রাখতে প্রতি মাসে প্রায় ৩-৪ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।

বিনিয়োগ পুনরুদ্ধারের জন্য ২০২৩ সালে কিয়েভের প্রয়োজন ১৪ বিলিয়ন ডলার।

রাশিয়ার আগ্রাসন লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনীয়কে বাস্তুচ্যুত করেছে। যুদ্ধটির ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানির দামও বেড়েছে। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসন ইউক্রেনে ১৫ বছরের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করেছে। মোট দেশজ উৎপাদন ২৯ শতাংশে নেমে এসেছে। 

১ দশমিক ৭ মিলিয়ন ইউক্রেনীয়কে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এই যুদ্ধ। ইউক্রেনের জ্বালানি খাতও এ যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, জ্বালানি খাতে মোট লোকসান এখন গত গ্রীষ্মের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি।

ইত্তেফাক/ডিএস