শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বর্জ্যের বিনিময়ে ইফতার সামগ্রী পেলেন সোনাদিয়াবাসী

আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৩, ১৭:৩৪

কক্সবাজার মহেশখালীর সোনাদিয়ায় ‘মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন’ নামে স্বেচ্ছাসেবী একটি সংস্থা দ্বীপবাসীর জন্য অভিনব সেবা চালু করেছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) পৃষ্ঠপোষকতা ও উপকূলীয় বন বিভাগের সহযোগিতায় দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে বর্জ্যের বিনিময়ে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। 

ছবি: ইত্তেফাক

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে সোনাদিয়ার পশ্চিমপাড়া এলাকায় বর্জ্য বিনিময় ও ইফতার বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। রোজার একদিন আগে খেজুর, মুড়ি ও অন্যান্য ইফতার সামগ্রী পেয়ে বেজায় খুশি সোনাদিয়াবাসী। 

বেজা’র সহকারী ম্যানেজার আমজাদ হোসেন বলেন, সোনাদিয়া একটি সম্ভাবনাময় দ্বীপ। এখানে গড়ে তোলা হচ্ছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ কারণে দ্বীপকে পরিচ্ছন্ন রাখতে স্থানীয় অধিবাসীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় বন বিভাগ ও বেজার সহযোগিতায় এ উদ্যোগে রয়েছে ইফতার ও ইদ সামগ্রী বিতরণ। ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্য ও অন্যান্য বর্জ্য বিনিময় করলেই ইফতার ও ইদ সামগ্রী পাবেন দ্বীপবাসী।

ছবি: ইত্তেফাক

স্থানীয় সুলতান আহমদ নামের এক ব্যক্তি জানান, প্রায় ৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপে একটি মাত্র প্রাইমারি স্কুল। নেই কোনো সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান। নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত এ দ্বীপে ইফতার সামগ্রী উপহার পাওয়া, তাও আবার ময়লার বিনিময়ে এটি সত্যিই অন্যরকম অনুভূতি। এ আয়োজনের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে দ্বীপটি রক্ষা পেতে পারে। 

সালেহা আকতার নামে এক উপকারভোগী বলেন, প্লাস্টিক ও অপচনশীল ময়লা জমা দিয়ে ইফতার সামগ্রী পেয়েছি। আবর্জনা দিয়ে এসব পাওয়া যাবে কখনো ভাবিনি। এখন থেকে প্লাস্টিক ফেলে না দিয়ে সংরক্ষণ করবো। আশেপাশে কোনো ময়লা পেলে তাও কুড়িয়ে রাখব।

ছবি: ইত্তেফাক

স্থানীয় ইউপি সদস্য একরাম মিয়া বলেন, প্রশাসন ও মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশনের এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ দ্বীপ ও বসতবাড়িকে আবর্জনা মুক্ত করতে সহায়তা করবে।

কার্যক্রমের সমন্বয়ক একেএম হাসানুজ্জামান মৃদুল বলেন, রমজানে পুরোমাস এ কাযর্ক্রম অব্যাহত থাকবে। ইদের আগে দ্বীপের সাড়ে তিনশ পরিবারের প্রায় ২ হাজার ৫০০ মানুষকে নতুন জামা উপহার দেওয়া হবে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের দ্বীপ ও সৈকতকে দূষণমুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসন নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অসচেতনতা ও অবহেলার কারণে পুরোপুরি সফলতা আসছে না। সচেতনতা তৈরিতে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ শুরু করেছে। সোনাদিয়ায় মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন বর্জ্যের বিনিময়ে দ্বীপবাসীকে ইফতার সামগ্রী দিয়েছে। যা এক অভিনব উদ্যোগ। আশা করছি এসব উদ্যোগের মাধ্যমে দ্বীপের পরিবেশ রক্ষা পাবে।

মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন সৃষ্টিশীল কর্মের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সুবিধা বঞ্চিতদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে সংস্থাটি।

ইত্তেফাক/এবি/পিও