শিক্ষকের ভুলে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ট্যাবলেট কম্পিউটার (ট্যাব) থেকে বঞ্চিত নেত্রকোনার পূর্বধলা জগৎমণি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকী মামুন নিয়ম বহির্ভূতভাবে ট্যাবগুলো মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ না করে স্বজনপ্রীতি করেছেন। ফলে বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষকের ছেলে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের পিয়নের ছেলে ও সাংবাদিকের মেয়েসহ সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সন্তানদের মাঝে বিতরণ করেন।
উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিসংখান অফিসের উদ্যোগে জনশুমারী ও গৃহগণনা ২০২১ প্রকল্প হতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে উপজেলার ৩২টি প্রতিষ্ঠানের নবম ও দশম শ্রেণির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী তিনজন করে ১৯৮ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে ১৯৮টি ট্যাব বিতরণ করার কথা থাকলেও পূর্বধলা জগৎমণি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এ নিয়ম মানা হয়নি। রোববার (২৬ মার্চ) উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সের সভাপতিত্বে আযোজিত এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করা হয়। কিন্তু সেই তালিকায় পূর্বধলা জগৎমণি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের নাম নেই।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির প্রথম স্থান অধিকারী শিক্ষার্থী আছিয়া আলম, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী শিক্ষার্থী মো. সাদিক ও তৃতীয় স্থান অধিকারী শিক্ষার্থী নাফিজা আক্তার মিথি জানান, নিয়ম অনুযায়ী তারা ট্যাব পাওয়ার কথা থাকলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়মে ওই ট্যাব থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছেন।
শিক্ষার্থী নাফিজা আক্তার মিথির বাবা মো. হালিম বিশ্বাস জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় তাদের সন্তানদের হৃদয়ে দাগ কেটেছে। তাই এ ঘটনায় তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আলম জানান, তিনি উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানদের জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের নবম ও দশম শ্রেণির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী তিনজন করে শিক্ষার্থীর নামের তালিকা প্রদানের জন্য। প্রতিষ্ঠান থেকে যাদের নাম পাঠানো হয়েছে তাদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করা হয়েছে।
জগৎমণি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকী মামুন জানান, পরিপত্রটি আমি খেয়াল করিনি। আমার ভুল হয়েছে। ইউএনও স্যার বলেছেন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিতরণকৃত ট্যাবগুলো ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু এখন আমি কীভাবে এগুলো ফিরিয়ে আনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি এবং ঘটনার সত্যতাও মিলেছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। ট্যাবগুলি ফিরিয়ে আনার জন্য তাকে বলা হয়েছে।