শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

১৯ মামলায় আসামি ৮০

মহেশখালীতে বন কেটে ঘের, ৩০০ একর বনভূমি উদ্ধার

আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৩, ০২:২১

চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের মহেশখালীর গোরকঘাটা রেঞ্জে গাছ কেটে জবরদখলে ঘের করা প্রায় ৩০০ একর বনভূমি দখলমুক্ত করেছে বন বিভাগ। গত পাঁচ দিনে (২৩ থেকে ২৭ মার্চ) সশস্ত্র অভিযান চালিয়ে মহেশখালীর পানিছড়ার পশ্চিমে গোরকঘাটা রেঞ্জের ঝাপুয়া বিটের অমাবস্যাখালী মৌজার বগা চত্বর ও আন্দারঘোনা এলাকায় এসব বনভূমি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। এ সময় দখলদারেরা বনকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। অভিযানকারীরাও আত্মরক্ষায় শত রাউন্ড গুলি ছুড়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, পাহাড়ি বদ্বীপ মহেশখালীর দুর্গম উপকূল এলাকা গোরকঘাটা রেঞ্জের ঝাপুয়া বিটের অমাবস্যাখালী মৌজার বগা চত্বর ও আন্দারঘোনা এলাকায় উপকূলীয় বনের সৃজন করা বাইনবাগান কেটে অবৈধ বাঁধ দিয়ে ঘের ও লবণের মাঠ তৈরি করে ভোগদখলে নেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। বন বিটের লোকবলের স্বল্পতায় দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞায় তোয়াক্কা না করে উলটো হুমকি দিয়ে এসব দখল কার্যক্রম চালিয়েছিলেন। এসব ঘটনায় একাধিক মামলা হলেও দখল কার্যক্রম বন্ধ হয়নি, বরং বেড়েছে দখলের পরিধি।

সূত্র আরও জানায়, অব্যাহত দখলে উপকূল রক্ষাকারী বাইনগাছশূন্য হয়ে উঠছিল মহেশখালীর উপকূল। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ডিএফওর নেতৃত্বে ২৩ মার্চ থেকে অর্ধশত বনকর্মী সশস্ত্র অভিযান শুরু করেন। এর আগেও অভিযানে গিয়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, অবৈধ ক্ষমতার দাপটে বিফল হওয়ায় অভিযান সম্পর্কে কাউকে জানানো হয়নি। এক্সকাবেটর নিয়ে দিনে-রাতে সমানতালে এক ঘের থেকে অন্য ঘেরে গিয়ে বাঁধ কেটে দিয়ে বনভূমিগুলো জবরদখলমুক্ত করে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে।

ডিএফও আবদুর রহমান জানান, অভিযানকালে ভূমিদস্যরা বনকর্মীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। জবাবে বনকর্মীরাও শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় ১৬টি বন মামলা ও তিনটি পুলিশ মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ ৮০ জনকে প্রত্যক্ষ এবং আরও শতাধিক লোককে পরোক্ষ আসামি করা হয়েছে। আগের মামলায় দখলকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বনভূমি দখলমুক্ত করার অভিযানে বন বিভাগ কক্সবাজারের     

সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ আবুল কালাম আজাদ, গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী, মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা খান জুলফিকার আলীসহ উপকূলীয় বন বিভাগের অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারী ৩৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সহস্রাধিক গুলি ও কার্তুজসহ অংশগ্রহণ করে। দখলকারদের গুলির বিপরীতে বনকর্মীরা ১১৩ রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন বলে উল্লেখ করেছে বন বিভাগ।

ইত্তেফাক/এমএএম