কাপ্তাইয়ে অবস্থিত কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র পানির সংকটে পড়েছে। কাপ্তাই লেকে পানি আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাওয়ায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পানির অভাবে যে কোনো মুহূর্তে কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আব্দুজ্জাহের কাপ্তাই লেকে পানিসংকটের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চরম সংকটের মধ্যে আমরা দিন কাটাচ্ছি। বৃষ্টি না হওয়ায় কাপ্তাই লেকে পানি দিনে দিনে হ্রাস পাচ্ছে। পাঁচটি ইউনিট চালু করে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে আমরা শুধু একটি ইউনিট সচল রেখে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি। তিনি বলেন, রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী কাপ্তাই লেকে এখন (২৯ মার্চ) পানি থাকার কাথা ৮৮.৬৮ ফুট মিন সি লেভেল পানি। কিন্তু লেকে এখন পানি রয়েছে ৭৬.৪৯ ফুট মিন সি লেবেল। পানির পরিমাপ ৭০ ফুট মিন সি লেভেলে নেমে এলে কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে। কেননা, এই লেভেল পানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।
জানা গেছে, কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মোট পাঁচটি ইউনিট রয়েছে। বর্তমানে সবগুলো ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম রয়েছে। কিন্তু লেকে পানি কম থাকায় চারটি ইউনিট বন্ধ রেখে বর্তমানে শুধু ২ নম্বর ইউনিট সচল রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এই ২ নম্বর ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও এখন মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে, যার পুরোটাই জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হচ্ছে।
ভারী বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে পানি বাড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আকাশে মাঝেমধ্যে মেঘের আনাগোনা দেখা গেলেও বৃষ্টির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। টানা ভারী বৃষ্টি না হলে লেকে পানি বাড়বে না। আর লেকে পানি না বাড়লে কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এখন আকাশের দিকে চেয়ে আছে, কখন ভারী বৃষ্টি নামবে আর কখন কাপ্তাই লেক পানিতে ভরে উঠবে।