সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

মসজিদ-মন্দির নির্মাণ সম্প্রীতির বন্ধন আশ্রায়ন প্রকল্পে

আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০৭

ঈশ্বরদীর বহরপুর আশ্রায়ন প্রকল্পে নির্মিত মসজিদ ও মন্দির ভূমিহীনদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। হিন্দু-মুসলমান মিলে মিশে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে নির্বিঘ্নে যার যার ধর্ম পালন করছেন।

প্রকল্পে ঘর নির্মাণের বরাদ্দ থাকলেও ছিল না মসজিদ সংস্কার কিংবা মন্দির নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ। কিন্তু ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসনের চেষ্টায় মসজিদ সংস্কার এবং মন্দির নির্মাণ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈশ্বরদী-পাবনা সড়কের পাশে মুলাডুলি ইউনিয়নের বহরপুর আশ্রায়ণ প্রকল্পে মোট ৩১৬ ভূমিহীন পরিবারের বসবাস করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৫ পরিবার রয়েছে। মোট দুই সহস্রাধিক মানুষের বসবাস। প্রথমে ছিল ৯৬টি বাড়ি। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক গৃহহীন ও ভুমিহীনদের জন্য আশ্রায়ন প্রকল্পে এবারে ১৯৬টি বাড়ির বরাদ্দ থাকলেও উপজেলা প্রশাসনের প্রচেষ্টায় ২২০ বাড়ি নির্মাণ হয়েছে। মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এসব বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পুরাতন মসজিদ সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে মন্দির নির্মাণ করায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে নিয়মিত পূজা-অর্চনা পালন করতে পারছেন।

বহরপুর আশ্রায়ন প্রকল্পের মসজিদ। ছবি: ইত্তেফাক

সুবিধার ভোগী বাবলু চৌধুরী বলেন, পূজার জন্য এখন আট মাইল দূরে ঈশ্বরদী শহরে বা দাশুড়িয়ায় মন্দিরে যেতে হয় না। ইউএনও মন্দির করে দেওয়ায় সুখে-শান্তিতে আছি।

দিলিপ দাস বলেন, ইউএনও সাহেব মন্দির বানিয়েছেন। হিন্দু-মুসলমান মিলেমিশে আছি।

প্রকল্পের সমবায় সমিতির সভাপতি ভূমিহীন ফারুক হোসেন বলেন, আত্মীয়ের মতো আমরা একে অপরের সুখ ও দুঃখ ভাগাভাগি করে বাস করছি। আমাদের ঈদ, শবেবরাত, মিলাদে এবং হিন্দুরের পূজা সবই উপভোগ করি। ইউএনও সপ্তাহে দুবার এসে খোঁজখবর নেন। কোন সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক সমাধান করেন।

বহরপুর আশ্রায়ন প্রকল্পে মন্দিরের সামনে সুবিধাভোগী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। ছবি: ইত্তেফাক

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, ঈশ্বরদীতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রকৃত ভূমি ও গৃহহীনদের ঘর বরাদ্দ দিয়েছি। মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি মসজিদ আগে থেকেই ছিল, সেটি সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা ভেবে মন্দির নির্মাণ করেছি। মন্দির নির্মাণে টিআর প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থে মন্দিরের অর্ধেক কাজও হয়নি।

তিনি জানান, আশ্রায়ণ প্রকল্পের বেঁচে যাওয়া ইট, সিমেন্ট, টিন ও বালু ব্যবহার করে মন্দির নির্মাণ হয়েছে। মন্দিরের অসম্পূর্ণ কাজ ধাপে ধাপে করা হবে।

ইত্তেফাক/আরএজে