সন্তান জন্মগ্রহণের পর অনেক নতুন মা আছেন যারা রোজা রাখেন। কাজেই রমজান মাসে মায়ের বুকের দুধ কমে যাওয়ার আশংকা থাকে। অথচ নবজাতকের প্রথম ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মাত্র মায়ের দুধই তার প্রধান খাদ্য।
এক্ষেত্রে রোজাদার নতুন মায়েদের খাদ্য তালিকা এবং তাদের যত্ন সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন মা ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফারহানা পারভীন ফ্লোরা। চলুন জেনে নেই-
প্রোটিনজাতীয় খাবার: রোজার সময় নবজাতকের মায়ের জন্য প্রোটিনযুক্ত খাবার অবশ্যই প্রয়োজন। তাকে এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত, যাতে পুষ্টির ঘাটতি দেখা না দেয়। খাবারের তালিকায় দৈনিক আমিষ বা প্রোটিনজাতীয় খাবার যেমন: ডিম, দুধ, মাছ মাংস, ডাল খাওয়া উচিত। এসব থেকে আমিষজাতীয় খাদ্যের উপাদান পাওয়া যাবে। বুকের দুধে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামের উপস্থিতির জন্য খেতে হবে সবুজ শাবসবজি, দই, পনির, বাদাম ইত্যাদির সাথে থাকবে নানা মৌসুমি ফল। ইফতারে খেজুর থাকলে শরীরের প্রয়োজনীয় লৌহের চাহিদা মেটে।
তরল খাবার: নতুন মায়ের শরীরের সুস্থতা এবং বুকের দুধ বাড়াতে তরল খাবার বেশী করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। মায়েদের জন্য তরল খাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন ধরনের স্যুপ, ঝোল, ডাল, শরবত, সাগু, ফলের রস ইত্যাদি তরল খাবার সেহেরী ও ইফতারিতে অবশ্যই রাখা উচিত।
শাকসবজি: রোজায় যেকোন সবুজ শাক-সবজি নতুন মায়েদের জন্য খুবই উপকারী। বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। শাক-সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন। এর মধ্যে পালং শাক, কচু শাক, অন্যতম। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ফলিক অ্যাসিড থাকে, যা নতুন রক্ত কোষ তৈরি করে। যে সকল মায়েদের শিশু জন্মদানের সময় রক্তপাত হয়ে থাকে তাদের জন্য পালং শাক খাওয়া অনেক প্রয়োজন।
পানি: স্তন্যদানকারী মায়ের সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে পানি। শরীরের জন্য যেমন প্রচুর পানি প্রয়োজন, তেমনি বুকের দুধ উৎপাদনেও পানির চাহিদা অপরিসীম। ইফতারের পর থেকেই অল্প অল্প করে পানি পান করতে থাকুন। পানি ভালো না লাগলে ফলের রস পান করুন। নতুন মাকে ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত সময়টায় অন্য সময়ের চাইতে বেশিই পানি পান করতে হবে।
যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে: মায়েদের রোজায় চা কিংবা কফি পান করা উচিত নয়। চা বা কফি শরীরকে পানি শূণ্য করে ফেলে। একান্তই যদি পান করতে হয় তাহলে হালকা লিকারের রঙ চা পান করুন।
পর্যাপ্ত ঘুম: নবজাতক মাকে রোজার সময়টায় পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার সাথে সাথে অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুম যেতে হবে। যা খাবার হজম হতে সাহায্য করবে। ইবাদত ও সন্তান পালন করতে গিয়ে দেখা যায় মায়েদের ঘুমের খুব সমস্যা হয়। কিন্তু এই সময়ে স্তন্যদানকারী মায়ের দরকার পর্যাপ্ত ঘুম।