শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অর্থসংকটে বাফুফে, আপাতত বন্ধ হচ্ছে না একাডেমি

আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৩, ১০:০০

অলিম্পিক গেমস ফুটবল বাছাইয়ে খেলা হলো না বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের। মিয়ানমারে গিয়ে বাছাই খেলতে হলে নাকি অনেক টাকার প্রয়োজন তা দিতে পারেনি বাফুফে। তাই সাবিনা, মৌসুমী, সানজিদা, তহুরাদের ইরান, মিয়ানমারের বিপক্ষে খেলা হলো না। ৭০/৮০ লাখ টাকার দরকার ছিল। কেউ বিশ্বাস করছে না এই টাকা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই বাফুফে। 

এতই অর্থ সংকট হয়ে গেল বাফুফের কোষাগারে! তাহলে ফিফা হতে আসা ফান্ড কোথায় যায়। বাফুফের হাজারও খরচ। তাই বলে ৭০ লাখ টাকার অভাবে খেলতে যাবে না তা কেউ বিশ্বাস করতে চাইছে না। তাহলে কি ইরান, মিয়ানমারের বিপক্ষে হারবে বলে যাবে না? মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বললেন, ‘না না। তা কী করে হয়। হরবে বলে যাবে না, এটা ঠিক না। বড় দলের বিপক্ষে না খেললে অভিজ্ঞতা হবে কী করে। আসল কারণ হচ্ছে টাকা। আমরা চেষ্টা করেছি হয়নি।’

বাফুফের সহ সভাপতি আতাউর রহমান মানিকের কণ্ঠেও একই কথা, ‘টাকা নেই।’ শোনা যাচ্ছে এলিট একাডেমি বন্ধ হয়ে যাবে। মানিক বললেন, ‘বন্ধ হবে কি না বলতে পারছি না। কত দিন চালাতে পারব সেটা নিয়েই আশঙ্কায় রয়েছি।’

কদিন আগেও, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের পর বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন একাডেমি বন্ধ হওয়ার বিষয়ে। সেটি নিয়ে গতকাল দেশের বাইরে থেকে ফোনে কথা বলেন আতাউর রহমান মানিক। তিনি বলেন, ‘মেয়েরা যেতে পারল না। অর্থ নেই বলে। তবে অর্থসংকট নতুন না। সংকট সব সময়। আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখনও দেখেছি বাজেট ঘাটতি নিয়ে চলছে।’

এলিট একাডেমি বন্ধ হয়ে যাবে কি না ? ‘বন্ধ হওয়ার মতোই অবস্থা-বললেন মানিক। কী কারণে বন্ধ হবে ? এমন প্রশ্নে বললেন, ‘আপনারা খেয়াল করবে দেখবেন আমরা যখন এই একাডেমি শুরু করি। প্রথম দিন থেকেই বলেছিলাম এটা কনটিনিউ করতে পারব কি না। কারণ এখানে প্রচুর অর্থ লাগে। ৬৫ জন ফুটবলার আছে ক্যাম্পে। অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১৯, অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবলাররা রয়েছেন। তারা বিসিএলে খেলছেন। রেজাল্টও ভালো। ক্যাম্পের খেলোয়াড়দের পেছনে প্রচুর খরচ। বুট কেনা থেকে শুরু করে ডাক্তার, খরচ শেষ হয় না।’ 

তাহলে কি ব্যয় কমানো হচ্ছে ? মানিক বললেন, ‘ব্যয় কমানোর সুযোগ নেই। দেখুন একটা দল চালাতে গেলে কি পরিমান অর্থ লাগে সেটা ক্লাবগুলো জানে।  এখন কেউ অর্থ দিতে চায় না। আমরা নিজেদের অর্থ দিয়ে শুরু করেছিলাম। স্পন্সর পাবো শিওর ছিলাম। কিন্তু বৈশ্বিক মন্দায় অনেকেই দুরে সরে গেছেন।’ তাহলে কি একাডেমি বন্ধ হয়ে যাবে? আমরা তো বন্ধ করার জন্য একাডেমি চালু করিনি। এখান থেকে খেলোয়াড় বের হবে। জাতীয় দলে ঢুকবে সেটাই ছিল পরিকল্পনা।’

বাফুফের এলিট একাডেমি এখন বিসিএল খেলছে। এখন যদি এই ক্যাম্প বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তাহলে লিগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। লিগ চলাকালীন কোনো ক্লাব সরে যায় না। আশঙ্কা করা হচ্ছে অর্থ সংকট দুর না হলে লিগ শেষেই হয়তো একাডেমির পাঠ বন্ধ হয়ে যাবে। আর যদি এর মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় বাফুফের ৫০০ কোটি টাকার বাজেট পুনর্বিবেচনা করে তাহলে হয়ত অন্যান্য পরিকল্পনার সঙ্গে একাডেমিও চাঙ্গা হয়ে উঠবে।

ইত্তেফাক/এসএস