মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুরে বর্ডারপাড়ায় চাঞ্চল্যকর আবুজেল ও রফিকুল ইসলাম দুই ভাইকে হত্যার দায়ে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।
একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডিতরা হলেন-কাজীপুরের আব্দুল হালিম, আতিয়ার রহমান, জালাল উদ্দিন, শরিফুল ইসলাম, শরিফ হোসেন, দবির উদ্দিন, আজিজুল হক, ফরিদ হোসেন ও মনিরুল ইসলাম মনি। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক রয়েছেন।
জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ জুন গাংনীর কাজিপুর এলাকায় ফেনসিডিলের একটি বড় চালান ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় একই গ্রামের কিয়ামুর্দ্দীনের ছেলে আবুজেল (৩৫) ও রফিকুল ইসলাম (৪০) ফেনসিডিল ধরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে তাদের হাত রয়েছে এমন অভিযোগ তোলা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১২ সালের ১৫ জুন রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেই আসামিরা। পরদিন সকালে কাজিপুর গ্রামের মণ্ডলপাড়া এলাকার ভারতীয় সীমান্তের বাংলাদেশের অংশে লাল্টুর মরিচ ক্ষেত থেকে তাদের দুই ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির তৈরি হয়। পরে দুই ভাইকে হত্যার ঘটনায় নিহতদের বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে গাংনী থানায় হত্যা মামলা করেন।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার এসআই আসাদুজ্জামান মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। মামলার অপর আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাস দেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক এবং আসামি পক্ষে আতাউল হক, এ কে এম শফিকুল আলম এবং কামরুল হাসান আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
মামলার রায় ঘোষণার পর অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক বলেন, এটা মেহেরপুরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রায়। এই রায় ঘোষণার মধ্যে দিয়ে আবারও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মামলার বাদী জরিনা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আদালতের এই রায় অনতিবিলম্বে কার্যকরের দাবি জানান তিনি।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।