ইইউ ইউক্রেনকে সাহায্য করে রাশিয়ার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছে। এর ফল ইইউকে ভুগতে হবে বলে জানিয়েছেন লাভরভ। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার (৩ এপ্রিল) দেশের একটি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে যেভাবে সাহায্য করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো, তা দৃষ্টিকটু। এর জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ইইউ এর ক্রমশ দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই দূরত্ব আরও বাড়বে এবং ইইউকে তার ফল ভুগতে হবে।
রাশিয়া দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনোরকম আপোস করবে না এবং তার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। অন্যদিকে, সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্টের রাশিয়া সফর নিয়েও বহু কথা বলেছেন লাভরভ।
তিনি জানিয়েছেন, দুই দেশের প্রেসিডেন্টের ১০ ঘণ্টার উপর আলোচনা হয়েছে। চীন ও রাশিয়া কৌশলগতভাবে কমরেড। আগামী দিনে দুই দেশের সমঝোতা যাতে আরও মজবুত হয়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে শি জিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিনের।
বস্তুত, শি যে সময় রাশিয়া সফর করেছেন, ঠিক সেই সময়েই পুতিনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আন্তর্জাতিক আদালত। ঠিক সেই সময়ে শি রাশিয়া পৌঁছানোয় ইউরোপের বহু বিশ্লেষক বলেছিলেন, ক্ষমতা জাহির করতেই এই সময় শি এর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন পুতিন।
একইসঙ্গে তারা বলেছিলেন, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে অসম সমঝোতা তৈরি হচ্ছে। চীন রাশিয়ার পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সস্তায় প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল নেওয়ার চেষ্টা করছে। এদিন এই বক্তব্যের ঘোর সমালোচনা করেছেন লাভরভ। তার বক্তব্য, দুই দেশ সমানে সমানে কৌশলগত সমঝোতা করেছে।
লাভরভের পাল্টা সমালোচনা, রাশিয়া ও চীনের এই সমঝোতায় অস্বস্তিতে পড়েছে ইইউ। সে কারণেই এই ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে। ইইউ এর প্রতি যথেষ্ট ক্ষোভ জানিয়েছেন লাভরভ।
তার বক্তব্য, ইইউ এর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ইউক্রেনকে যেভাবে অস্ত্র ও ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে, তা অভূতপূর্ব। এর ফলে ইইউ এর সঙ্গে রাশিয়ার দূরত্ব ক্রমশ বেড়েছে। এই দূরত্ব আর কমানো যাবে না। রাশিয়ার কাছে জাতীয় স্বার্থ সবচেয়ে বড়। ইইউ সেখানেই আঘাত করেছে। এর ফল ইইউ কে ভুগতে হবে।
সোমবার ছিল আন্তর্জাতিক মাইন দিবস। এই দিনটিকে মনে রেখে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক জানিয়েছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের খেতে মাইন পুঁতে দিয়েছে। ফলে বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দ্রুত ওই মাইনগুলো তুলে ফেলা উচিত। বেসামরিক মানুষের উপর আঘাত হানা যুদ্ধাপরাধ।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোরের দিকে ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে আঘাত হানে রাশিয়ার ড্রোন। ইউক্রেন জানিয়েছে, ড্রোন হামলায় প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে বন্দরের একাংশ। এই বন্দর দিয়ে কৃষ্ণসাগরে রসদ পাঠাচ্ছিল ইউক্রেন। ফলে সে কাজও ক্ষতিগ্রস্ত হলো বলে মনে করা হচ্ছে।