বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ঘাট ও টার্মিনাল দখলে নেওয়ার অভিযোগ সাদিকবিরোধীদের

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:৫৪

নৌকার মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারীদের নিয়ন্ত্রিত ঘাট ও টার্মিনাল দখলে নেওয়া শুরু করেছে সাদিক বিরোধীরা। গত চার দিনে বরিশালের রুপাতলী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন থ্রি হুইলার স্ট্যান্ড ও মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড মহড়া দিয়ে দখলে নেয় জেলার মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের দুই নেতা।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বরিশাল মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম মানিক ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান সুমন মোল্লা বলেন, থ্রি হুইলার মাহিন্দ্রা স্ট্যান্ড ও মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করত মীর রনি। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবে আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। 

সাদিক আব্দুল্লাহর অনুুসারী রুপাতলী মিনিবাস টার্মিনালের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের জানান, মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ দায়িত্ব নেওয়ার আগে এখানে যারা চাঁদাবাজি করত তারাই এখন আবার এর দখল নিতে মহড়া দিচ্ছে।

এছাড়া নগরীর স্পিডবোট ঘাট দখলে নেন আওয়ামী লীগ কর্মী সাদ্দাম হোসেন শাহ ও তার অনুসারীরা। রোববার থেকে দলবল নিয়ে ট্রিপ প্রতি ১০০ টাকা করে নেওয়া বন্ধ করে দেন তারা। সাদ্দাম জানান, উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুুল আমাদের মালিকানাধীন ১০টি স্পিডবোট বন্ধ করে দেয় এখানে। তারপর থেকে আমরা মানবেতর জীবনযাপন শুরু করি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা ঘাটে অবস্থান নিয়েছি। এখানকার ১৫০টি বোটমালিকের একটাই দাবি, চাঁদাবাজ মুক্ত হোক স্পিডবোট ঘাট। 

১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখর দাস বলেন, সাত মাস ধরে আমাদের বোট বন্ধ করে দিয়েছেন নিরব হোসেন টুটুল।

এ বিষয়ে সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী নিরব হোসেন টুটুুল বলেন, স্পিডবোট ঘাটে আমার কোনো বিষয় নেই। সেখানে চলাচলকারী স্পিডবোটগুলো থেকে ৪০০/৫০০ টাকা করে চাঁদা নিত সাদ্দাম ও তার লোকজন। বিষয়টি সম্পর্কে মেয়র মহোদয়ের কাছে অভিযোগ গেলে তিনি চাঁদাবাজ সাদ্দামের স্পিডবোটগুলোর চলাচল বন্ধ করে দেন। একই সঙ্গে চাঁদাবাজ মুক্ত করা হয় স্পিডবোট ঘাট। কেবল কর্মচারীদের বেতন বাবদ ১০০ টাকা করে নেওয়া হতো। মেয়র মহোদয় মনোনয়ন পাননি শুনেই পুরোনো চাঁদাবাজরা আবার ঘাট দখলে নিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। তারা যদি মনে করে, মেয়র সাদিকের রাজনীতি শেষ তাহলে ভুল করবে। কী পেলেন না পেলেন সেই হিসেব করে নয়, সেরনিয়াবাত পরিবারের সন্তান সাদিক আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে রাজপথে থাকবেন। এসব স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্থানে সাদিক আবদুল্লাহর সমর্থক ও বিরোধীদের পালটাপালটি শো-ডাউন দিতে দেখা গেছে কয়েক দিন ধরে।

সাদিক আবদুল্লাহর বিরোধী ১০ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, বিএম কলেজের সাবেক ভিপি মঈন তুষার-সহ অনেকেই নৌকার মনোনয়ন পাওয়া আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে শোডাউন করছে। 

এদিকে দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠ থেকে দূরে থাকা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতারা কর্মীদের জড়ো করে মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। উভয় পক্ষের শোডাউন ও পালটা শোডাউনে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। যে কোনো সময় তা সংঘাতে রূপ নিতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, নগরীর কোনো স্ট্যান্ডে কোনো প্রকার চাঁদাবাজি করতে দেওয়া হবে না। সে লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনা অনুযায়ী চৌকশ কর্মকর্তারা স্ট্যান্ডগুলোতে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন।  

 

 

ইত্তেফাক/পিও

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন