শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সৈকতে পুঁতে ফেলা হলো ভেসে আসা মৃত তিমিকে

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৯:২৪

কক্সবাজার উপকূলে প্রায় ১৪ ঘণ্টা ভেসে থাকার পর অবশেষে কলাতলী সমুদ্র সৈকতে আটকা পড়ে সেই মৃত তিমিটি। বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে আটকে পড়া স্থানেই মৃত বিশালাকার তিমিটিকে পুঁতে ফেলা হয়। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা কক্সবাজারের দরিয়ানগর থেকে রেজুরব্রীজ পয়েন্ট পর্যন্ত তিমিটি ভেসে বেড়ায়। পরে রাত ৩টার দিকে সমুদ্রের ভাটার কারণে তীরে আটকা পড়ে। 

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের কক্সবাজার (সদর) রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা বলেন, ভাসমান মৃত তিমিটির বিষয়ে নজর রেখেছিলো কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেল। রাতে তিমিটি বালিয়াড়িতে উঠে আসলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ’র তত্ত্বাবধানে সেখানেই পুঁতে ফেলা হয়। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বুরি) একটি বিশেষজ্ঞ দল রাত ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে ময়নাতদন্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন।

 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, মৃত তিমিটির দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ৫০ ফুট। শরীর জালে মোড়ানো থাকায় ধারণা করা হচ্ছে জেলেদের আক্রমণের শিকার হয়ে তিমিটি মারা গেছে। বেশ কিছুদিন আগে মরে যাওয়ায় পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধে আশেপাশের এলাকায় দাঁড়ানোও কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে। পৌরসভার সহযোগিতায় তিমিটি আটকে পড়া স্থানেই রাত ৩টার দিকে চাপা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বুরি) মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, এর আগে ২০২১ সালের ৯ ও ১০ এপ্রিল সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্টে দুটি মৃত তিমি ভেসে আসে। যেগুলো ছিল ‘ব্রাইডস’ প্রজাতির। মঙ্গলবার ভেসে আসা তিমিও একই প্রজাতির।

বুরির সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, তিমিটি অন্তত এক সপ্তাহ আগেই মারা গেছে। মৃত তিমিটির শরীরে জাল ও বয়া পেঁছানো রয়েছে। মাথায় রয়েছে আঘাতের চিহ্নও। সাধারণত জেলেদের জালে আটকা পড়ে, জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে অথবা সমুদ্র দূষণের কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে উপকূলের অগভীর জলে এসে আটকা পড়ে মারা যায়।

তিনি আরও বলেন, তিমিটি ‘ব্রাইডস হোয়েল’ বা ‘বলিন তিমি’ হিসাবে পরিচিত। ‘বলিনোপেট্রা ইডেনি’ এর বৈজ্ঞানিক নাম। এ প্রজাতির তিমির দাঁত নেই। এরা মুখের মধ্যে চিরুনির মতো একটি অংশ দিয়ে খাবার প্রক্রিয়াজাত করে।

কক্সবাজার উপকূলে প্রায়শই নানা সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ ভেসে আসে। গত তিনমাসে শত শত মৃত রাজকাঁকড়া, জেলিফিশ, কচ্ছপ ও ডলফিনসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী ভেসে আসে।

ইত্তেফাক/এবি/পিও