শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সৌদিতে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে কী করেছেন মেসি

আপডেট : ০৭ মে ২০২৩, ২১:৪৪

লিওনেল মেসির সৌদি আবর যাওয়া নিয়ে কত কাণ্ড। প্যারিস সেন্ত জার্মেইকে না জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে তিনি কেন গিয়েছিলেন, তা নিয়ে শুরু থেকেই ছিল কৌতূহল। পরে কারণ স্পষ্ট হলেও বেঁকে বসে পিএসজি। সবশেষে মেসির নিষেধাজ্ঞা ও ক্ষমাপ্রার্থনা। এত ঘটনাপ্রবাহের মাঝে সৌদি আরবে গিয়ে মেসির সময় কেমন কেটেছে, সেই গল্পটা হয়তো আড়ালেই পড়ে গেছে।

আড়ালে পড়ে যাওয়া কি স্বাভাবিক নয়? লিগ ওয়ানে লরিসের বিপক্ষে হারে এমনিতেই খারাপ অবস্থা ছিল পিএসজির। ওই পরিস্থিতির মাঝেই মেসির সৌদি যাত্রা। ক্লাবের কারও কাছে ‘অনুমতি’ না নিয়ে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের সৌদি যাওয়ার ব্যাপারটি ভালোভাবে নেয়নি প্যারিসের ক্লাবটি।

এখানে আরেকটি ব্যাপারও আছে। অনেক দিন থেকেই শোনা যাচ্ছিল, সৌদি ক্লাব আল হিলাল বিশাল অঙ্কের চুক্তিতে ঘরে তুলতে চাইছে মেসিকে। সেই সৌদিতেই যখন এই ফরোয়ার্ড গিয়েছেন, তখন পিএসজির মাথা খারাপ হওয়ারই কথা। যদিও মেসি মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে গিয়েছিলেন অন্য কাজে। সৌদি আরবের পর্যটনদূত আর্জেন্টাইন তারকা। তারই অংশ হিসেবে মরুর দেশে মেসির যাওয়া।

মেসি একা যাননি। স্ত্রী আন্তোনেলা ও তিন সন্তানকে নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছেন দারুণ সময়। গিয়েছিলেন দিরিয়া শহরে। ৩০০ বছরের পুরনো ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের এই জায়গাটির রয়েছে সুবিশাল ইতিহাস-ঐতিহ্য। এই শহরের স্থাপত্যশিল্প মুগ্ধতা ছড়ায়। পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে এই সৌন্দর্যের সুধা পান করেছেন মেসি নিজেও।

স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মেসি গিয়েছিলেন অ্যারাবিয়ান হর্স মিউজিয়ামে। সেখানে শুধু আরবীয় ঘোড়ার কাছেই যাননি তারা, মেসি হাতে নিয়েছেন সাদা রঙের বাজপাখি। মেসির হাতে দাঁড়িয়ে থাকা বাজপাখির সেই ছবি শেয়ার করেছে সৌদির পর্যটন বিভাগ।

সৌদির আনন্দভ্রমণে নতুন আরও অনেক অভিজ্ঞতা যোগ হয়েছে মেসির। বাজপাখি নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল এই তারকা সন্তানদের নিয়ে হাজির হয়েছিলেন আরবীয় হরিণের কাছে। শুধু দেখা নয়, হরিণকে খাবারও খাইয়েছেন তারা।

  সৌদি আবরে গিয়ে ইতিহাস-ঐতিহ্যেই ডুবে ছিলেন মেসি, ব্যাপারটা অমন নয়। পরিবারকে নিয়ে সেখানে পেয়েছেন ভবিষ্যতের ছোঁয়াও। দেশটির আধুনিক বিনোদনেও মুগ্ধ হয়েছেন পিএসজি তারকা।

শুধু ঘোরাঘুরি করলেই হবে! ঘুরতে গিয়ে খেতেও তো হবে, নাকি? রাজকীয় এই সফরে পরিবারের সঙ্গে মেসি খাবার খেয়েছেন ঐতিহাসিক আল বুজাইরি টেরেসে।

সব মিলিয়ে সৌদি আরবে মেসি ও তার পরিবারের কেটেছে দারুণ সময়। তবে এই আনন্দভ্রমণের মাঝে মেসি হয়তো বুঝতে পারছিলেন- পিএসজি থেকে খারাপ খবর আসতে পারে। এলোও তাই! শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে মেসিকে দুই সপ্তাহ নিষিদ্ধ করেছে। এই সময়ে খেলা তো বটেই, বেতনও পাবেন না বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক!

এই শাস্তিতে তো লাভই হয়েছে মেসির! পিএসজিতে মেসি ভালো নেই। ফরাসি ক্লাবটির মেগা প্রজেক্টে ‘পরিকল্পনার ঘাটতি’ আছে, মেসি নাকি নিজেও সেটি বুঝতে পারছেন। এর ওপর পিএসজি সমর্থকদের আচরণে ব্যথিত সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী। সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ম্যাচেই দুয়ো শুনেছেন তিনি। সৌদিতে যাওয়ার পর ক্লাবের কিছু সমর্থক ‘মেসি হটাও’ স্লোগানও দিয়েছেন পার্ক ডু প্রিন্সেসের সামনে। এর সঙ্গে যোগ হওয়া দুই সপ্তাহের শাস্তি। ভাবছেন, এখানে লাভের কী আছে?

লাভই তো। এই ঘটনাগুলোর ফলে মেসির পিএসজি ছাড়ার পথ সহজ হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিতে খুব বেশি দ্বিধার জায়গা থাকার কথা নয়। ইউরোপিয়ান গণমাধ্যমে সে কারণেই বলা হচ্ছে, পিএসজির জার্সিতে আর দুই ম্যাচ, তারপরই মেসির গায়ে উঠতে যাচ্ছে নতুন জার্সি। কোন জার্সি? বার্সেলোনার নীল-মেরুন? বাতাস তো সেদিকেই বইছে!

ইত্তেফাক/কেআর/