বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

টেকনাফ-সেন্টমার্টিনসহ উপকূলে দমকা হাওয়া, বাড়ছে পানির উচ্চতা

আপডেট : ১৪ মে ২০২৩, ১৫:০৯

কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিনসহ উপকূলে সাগরের পানির উচ্চতা বাড়ছে। শনিবারের চেয়ে বাড়ছে বৃষ্টি ও বাতাসের গতিও। বাতাসের গতি আরো বাড়লে ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূল অতিক্রম করা শুরু করতে পারে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা আবদুল্লাহ বলেন, শনিবার রাতেও তেমন বাতাস ছিল না। রোববার ভোর হতে বাতাস ও বৃষ্টি বাড়ছে। সাথে উচ্চতা বেড়েছে সাগরের পানিও। ঘূর্ণিঝড় মোখায় কি হবে, সে ভয়ে আছি আমরা। দমকা হাওয়া নিয়ে মোখা আঘাত হানলে দ্বীপের মানুষের কি হবে তা অনুমানও করা যাচ্ছে না। 

তিনি আরো বলেন, দ্বীপে স্থানীয় ও বাহিরের ব্যবসায়ী মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজারের অধিক লোকজন অবস্থান করছে। হোটেল, স্কুল-মাদ্রাসা ও সাইক্লোন শেল্টারে এতো মানুষ অবস্থান করা কষ্টকর। শেল্টারগুলো সাগরের কিনারে। তাই জলোচ্ছ্বাস হলে কেউ নিরাপদ নয়।

টেকনাফের বাহারছড়া উপকূলের বাসিন্দা মো. খালেদ মাহমুদ জানান, সাগরে পানির উচ্চতা বাড়তে শুরু করেছে, সাথে বাড়ছে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি। পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করা অনেক মানুষ এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে আসেনি। বাতাসের গতি বাড়লে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত উপকূলে বাড়তে পারে। তখন জলোচ্ছ্বাসসহ পাহাড় ধসের শঙ্কা রয়েছে।

হোয়াইক্যংয়ের বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, আগের ঘূর্ণিঝড়গুলোর চেয়ে মোখার ভয়াবহতা বেশি হবে সেই প্রচারণার পর হতে ভয়ের মধ্যে আছি। রোববার ভোর হতে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি বাড়তে থাকায় আতঙ্কটা আরো একটু বেড়েছে। ভয় থাকলেও হোয়াইক্যংয়ের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষ তেমনটি যায়নি। নাফ নদীতে পানির উচ্চতা বাড়ছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, রোববার সকাল হতপ দ্বীপের চারপাশে সাগরে পানির উচ্চতা বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে। বাড়ছে বৃষ্টি এবং দমকা বাতাস। লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর কাজ অব্যহত আছে। নারী-শিশুরা আশ্রয় কেন্দ্রে আছে। পুরুষরা এলাকার পরিস্থিতি অবলোকন করছি। পানি দ্বীপে উঠছে দেখলে পুরুষরাও আশ্রয় কেন্দ্রে উঠে যাবে সেইভাবে প্রস্তুতি রয়েছে। বাতাস ও বৃষ্টি বাড়ায় সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন জানান, উপকূলের বাসিন্দাদের অনেকে ইতিমধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে এসেছে। ভোর থেকে বৃষ্টি ও বাতাস বেড়েছে। যেকোনো দুর্যোগে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে সিপিপি সদস্যসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী দল প্রস্তুত রয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত থেকে লোকজনকে নিরাপদ রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দাদের বিভিন্ন হোটেল-মোটেলসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উঁচু ভবনে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমান খাবার মজুদ আছে। 

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান বলেন, মোখায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে উপকূল, নিম্নাঞ্চল এবং পাহাড়ে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। আমরা ক্ষতিরোধে করণীয় সবকিছুই করছি। আতঙ্কিত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলার অনুরোধ জানান তিনি।

ইত্তেফাক/আর