সহকারী অধ্যাপকের সঙ্গে অসদাচরণ ও হুমকি প্রদানের অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান জে এম ইলিয়াস (ইলিয়াস জোয়ার্দার) কে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে এ সকল তথ্য জানা যায়।
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা লুনার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন ও উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকার লিখিত অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনে উম্মে সালমা লুনার বাসায় ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা হওয়ায় আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান ইলিয়াসকে ফোন দেন তিনি। প্রথম দিনে তার ফোন রিসিভ না করলেও গত শনিবার তার বাসার রাউটারটি রিসেটাপ করে দেন ইলিয়াস। পরে লুনা তার রাউটারের পাসওয়ার্ড জানার জন্য ইলিয়াসকে কল দিলে তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন ইলিয়াস। এসময় তিনি বলেন, একজন শিক্ষকের কি কারণে ইন্টারনেট লাগে? এছাড়া তিনি স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে তাকে হুমকিও দেন।
এদিকে হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান জে এম ইলিয়াস (ইলিয়াস জোয়ার্দার) বলেন, আমি যদি কোন ভুল করে থাকি তাহলে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু আমাকে ঐ শিক্ষিকার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ফোন দিয়ে কয়েক দফায় হুমকি প্রদান করেছেন। তিনি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। এ অবস্থায় আমি এবং আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আছি। আমি প্রক্টর স্যারের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছি এবং পরবর্তীতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা লুনা বলেন, তিনি আমার সাথে খুবই বাজে ব্যবহার করেছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। আমি আইন অনুযায়ী তার বিচার চাই। তার স্বামী কর্তৃক ইলিয়াসকে হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি তাকে কোনো হুমকি দেননি।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, আশা করি আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগের ভিত্তিতে ঐ কর্মচারীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট দিলে সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।