রাশিয়া ইউক্রেনের রাজধানীতে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে, যা কিয়েভের এক কর্মকর্তা একে 'তীব্রতায় নজিরবিহীন' বলে অভিহিত করেছেন। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে চালানো এই হামলায় কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ইউক্রেনের রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেন শীঘ্রই দক্ষিণে রাশিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করবে। তার আগেই বিমান পথে রুশ হামলার তীব্রতা বেড়ে যায়।
স্থানীয় সময় রাত ২টা ৩০ মিনিটে দিকে কিয়েভে বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো হয় এবং দুই ঘণ্টা পর তা বন্ধ হয়। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ভ্যালেরি জালুঝনি জানান, রাশিয়া উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিক থেকে কিয়েভে ১৮টি আকাশ, সমুদ্র ও স্থল থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইউক্রেন সব ক্ষেপণাস্ত্রই ভূপাতিত করেছে।
আকাশে বিস্ফোরিত ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে জনগণকে জানালা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিৎসকো জানান, চিড়িয়াখানাসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেটের ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে।
ইউক্রেনের রাজধানীর সামরিক প্রশাসনের প্রধান সেরহি পপকো ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে মস্কোর এই মিশ্র হামলাকে 'তীব্রতার দিক থেকে নজিরবিহীন' বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, এবার রাশিয়া 'সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে'।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, কিয়েভের আকাশে শত্রুর বেশিরভাগ লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ধ্বংস করা হয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়, রাশিয়ার হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সোলোমিয়ানস্কি এলাকা। কিয়েভ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এই জেলায় অবস্থিত।
পপকো জানান, জেলার একটি অনাবাসিক এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত কয়েকদিন ধরে ইউরোপ সফরে রয়েছেন। এরই মধ্যে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ মিত্রদের কাছ থেকে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহায়তা পেয়েছেন।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর থেকে হাজার হাজার যোদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং অসংখ্য শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রায় ৮২ মিলিয়ন ইউক্রেনীয় শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং রাশিয়ায় আশ্রয় নেওয়া ইউক্রেনীয়দের সংখ্যা প্রায় ২৮ মিলিয়ন।