সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কারণে ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। সংস্কারের পর আগামী অক্টোবর মাস নাগাদ পুনরায় এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন চালুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে। ২০১২ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হয়। এরপর এবারই প্রথম দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৮৫ মেগাওয়াট। কিন্তু চাহিদানুযায়ী সরবরাহ হচ্ছে ১৪৫ মেগাওয়াট। শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ। আর গ্রামের বিদ্যুৎ সরবার করে চাঁদপুর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২। এসবের মধ্যে শহরের চাহিদা ৮০ মেগাওয়াট, পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২ এর চাহিদা ১০৫ মেগাওয়াট। তবে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সংকট থাকায় চাঁদপুরে চাহিদার তুলনায় মাত্র ৫০% বিদ্যুৎ পাচ্ছে গ্রাহকরা। যার কারণে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিং হচ্ছে।
এদিকে, দুই সপ্তাহ ধারাবাহিক লোডশেডিংয়ের কারণে শহর ও গ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোগান্তির শিকার সবাই। বার বার লোডশেডিং হওয়ায় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াসহ সমস্যায় পড়ছে জনগণ।
কেন্দ্রের প্রকৌশল বিভাগের তথ্য মতে, ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রথম ৫০ মেগাওয়াট এবং ৫ ডিসেম্বর বাকি ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি ১০০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি ৫০ দিন সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের পর চালু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু যন্ত্রাংশ সচল না হওয়ায় এখন পর্যন্ত এটি বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নূরুল আবছার বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়। মূলত এখানে আলাদাভাবে ৫০ ও ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন হয়। ১০০ মেগাওয়াটের ইউনিট ৫০ দিন সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের পর চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি চালু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে একটি গ্যাস বুষ্টার চালু না হওয়ায় উৎপাদনে যেতে পারিনি। গ্যাস বুষ্টারটি দেশীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে সচল করার চেষ্টা করি। আসলে এসব কাজ করতে হলে বিদেশি বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন। গ্যাস বুস্টারটি ঠিক করার জন্য তাদের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ দেশে আসবে। তখন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হবে।