সবাই মোবাইল ফোনে সর্বোচ্চ সেবা চান। কিন্তু টাওয়ার নির্মাণের জন্য কেউ জায়গা দিতে চান না। ফলে মানসম্পন্ন সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় একথা জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার।
শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারন ইনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিআরসির উপ-পরিচালক ড. সামসুজ্জোহা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টিআরএনবির সভাপতি রাশেদ মেহেদী। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন। অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল আলম, বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবির, এমটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এসএম ফরহাদসহ মোবাইল ফোন অপারেটর, টাওয়ার কোম্পানি, নেটওয়ার্ক সলিউশনের কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, মোবাইল ফোনের টাওয়ারের রেডিয়েশন নিয়ে এক ধরণের অপপ্রচার রয়েছে যে, এতে মানবদেহ কিংবা অন্যান্য জীবজন্তু বা উদ্ভিদের ক্ষতি করে। যদিও এমন কোন প্রমাণ নেই। কিছু কিছু মানুষের মধ্যে এক ধরনের কাল্পনিক ভীতি আছে যে মোবাইল টাওয়ারের কারণে ক্যানসারের মত নানা ধরনের সমস্যা হয়। এসব মোটেও বৈজ্ঞানিক নয়। এসব মানুষের কল্পনাপ্রসূত। আর এসব অপপ্রচারে ভীত হয়ে কোথাও কোথাও মানুষ মোবাইল ফোন টাওয়ার নির্মাণে বাধা দিচ্ছে, জায়গা খুঁজে পাওয়া যায় না। সরকারি অনেক ভবনে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্থানে টাওয়ার বসাতে দিচ্ছে না। আমরা সারাদেশে বিটিআরসির টিম পাঠিয়ে রেডিয়েশন পরিমাপ করেছি, কোথাও ক্ষতিকর মাত্রা পাওয়া যায়নি।
গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কের সমস্যার কথা উল্লেখ করে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমি মৌলভীবাজারে গিয়েছিলাম, গাড়িতে চলন্ত অবস্থায় নেটওয়ার্ক পায়নি। পরে অপারেটরটির প্রতিনিধিকে ডেকে জানিয়েছি। শুধু আমার জন্য না, ওই এলাকার মানুষ যারা ভুক্তভোগী তাদের কথা চিন্তা করে। নেটওয়ার্ক উন্নয়নে অপারেটরগুলো সর্বশেষ কেনা স্পেকট্রাম কাজে লাগাতে পারছে না জানিয়ে তিনি বলেন, এলসি খোলা বন্ধ থাকায় স্পেকট্রাম সম্প্রচারণে যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তা অপারেটরগুলো আমদানি করতে পারছে না। এটি করা গেলে নেটওয়ার্কের অনেক উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
মাহবুবুল আলম বলেন, রেডিয়েশন নিয়ে এক ধরণের ভীতি ছাড়ানো হচ্ছে। শারীরিক ক্ষতি হোক বা না হোক এটা নিয়ে মানসিক এক ধরণের ভীতি আছে। এটা দূর করতে হবে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবির বলেন, বাংলাদেশে যে ধরনের মোবাইল টাওয়ার ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হয় দুনিয়ার আর সব দেশেও ঠিক একই ধরনের যন্ত্রই ব্যবহার করা হয়। বিটিআরসি সময়ে সময়ে দেশ জুড়ে এসব টাওয়ারের রেডিয়েশনের পরিমাণ পরিবীক্ষণ করে এবং যে ফল পেয়েছে তাতে দেখা গেছে যে তা সহনীয় মাত্রার নিচে।
বক্তারা বলেন, যে অনেকেই অবৈধভাবে মোবাইল নেটওয়ার্কে জ্যামার, রিপিটার, বুস্টার লাগাচ্ছেন। এসব স্থাপন করা যাবে না। এগুলো অবৈধ। এসবের কারণেও নেটওয়ার্কের ক্ষতি হচ্ছে। গ্রাহকেরা নিজেরাই ঠিকমত সেবা পাচ্ছেন না। অপারেটরদের হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা তরঙ্গ ব্যবহারে বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে।