মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

আজ রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের জন্মদিন

আপডেট : ২১ মে ২০২৩, ২০:৪৮

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির জন্মদিন আজ রোববার, ২১ মে।  ১৯৮০ সালের ২১ মে যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জন্মদিন উপলক্ষে ব্যক্তিপর্যায় থেকে শুরু করে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।

ববির পিতা শফিক আহমেদ সিদ্দিক দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় রাদওয়ান। তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে গভর্ন্যান্স অ্যান্ড হিস্ট্রি বিষয়ে স্নাতক এবং একই প্রতিষ্ঠান থেকে কমপেরেটিভ পলিটিক্স বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। তার ছোট বোন টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য। 

রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক সিআরআইয়ের ট্রাস্টি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি দেখভাল করেন। এছাড়া এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘ইয়াং বাংলা’র মাধ্যমে তিনি তরুণদের ক্ষমতায়ন ও উদ্বুদ্ধকরণের কাজ করছেন।
 
সিআরআইয়ের মাধ্যমে অনলাইনভিত্তিক প্রচারে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন ববি। সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব অপপ্রচার হয়, তার তথ্যভিত্তিক জবাব দিয়ে আসছেন তিনি। 

জাতির পিতার জীবনী গ্রাফিক্যাল উপস্থাপনার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ‘গ্রাফিক নভেল মুজিব’ প্রকাশের প্রধান কারিগর ও প্রকাশক রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী প্রকাশের পর শিশু-কিশোর ও তরুণদের কাছে তার ঘটনাবহুল জীবন নতুন রূপে তুলে ধরার জন্য বইটিকে তিনি গ্রাফিক নভেলে রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেন।

নিজের শৈশবের সময়ের কথাগুলো স্মরণ করে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) ট্রাস্ট্রি রাদওয়ান মুজিব বলেছিলেন, "স্কুলে অনেকেই তখন নানার নামই শোনেনি। আমার বন্ধুরা বলতো, 'কে তোমার এই বঙ্গবন্ধু নানা?' স্কুলে আমার শিক্ষকরা বঙ্গবন্ধু শব্দটা শুনলে অনেক ঘাবড়ে যেতেন। আমাকে বলতো, 'বঙ্গবন্ধু বলতে হয়না স্কুলে'।" শুধু স্কুলে নয়, ইতিহাস বই, পাঠ্যপুস্তক এমনকি গণমাধ্যমেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম নেয়া ছিলো নিষিদ্ধ। এমনই এক অন্ধকার সময়ে বেড়ে উঠলেও নানার মতই দেশকে নিয়ে রাদওয়ান মুজিবের গর্ববোধ, ভবিষ্যৎ ভাবনা ও স্বপ্নের শেষ নেই। আজ রোববার (২১ মে) তার জন্মদিন। ১৯৮০ সালের ২১ মে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ঘর আলোকিত করেন তিনি। দিনের প্রথম প্রহরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন অসংখ্য ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তরুণ প্রজন্মকে সরাসরি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশে তাদের নতুন ধারণা ও উদ্ভাবনগুলোকে তুলে আনার জন্যই ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে ইয়াং বাংলা প্ল্যাটফর্ম। আনুষ্ঠানিক অভিযাত্রায় শরিক হয়েছিলেন দেশের ৬৪ জেলার ২৫০ তরুণ সংগঠনের প্রতিনিধি। তরুণ ও যুবশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চআয়ের দেশে রূপান্তরের ভিশনকে সামনে নিয়ে যে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে, সেটাকে আরও গতিশীল করতে ‘তোমার জয়ে বাংলার জয়’ স্লোগানে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগাতে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের নেতৃত্বে ‘ইয়াং বাংলা’ আত্মপ্রকাশ করে।

জয়া বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ও 'আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরষ্কার ২০২০' পাওয়া সাদাত রহমান স্কুল জীবন থেকেই কাজ শুরু করেন সাইবার বুলিং নিয়ে। এ বিষয়ে সচেতনতা কার্যক্রমের পাশাপাশি ভূক্তভোগীদের পরামর্শ প্রদান ও সঠিক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করে সাইবার টিন। সম্প্রতি এই সংগঠনের মাধ্যমে একটি হেল্প লাইন চালুর ব্যবস্থা করা হয়েছে যেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছ এই তরুণ। দেশ গঠনে তার এই স্বপ্ন পূরণের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে তিনি দেখেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিককে। সাদাত বলেন, উনি (রাদওয়ান মুজিব) তরুণদের নিয়ে যেভাবে ভাবেন, যেভাবে স্বপ্ন দেখেন, যেভাবে পরিশ্রম করেন; সেটি আমাদের সাহস যোগায়। আমরা তার দেখানো স্বপ্নের পথে হেঁটে জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম নালিশ করে না, তারা সমস্যার সমাধান করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের তরুণদের প্রতি যেই ভরসা তিনি রেখেছেন। আমরা সেটা পুরন করতে চাই।
 
এ সময় রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের ইয়াং বাংলা কার্যক্রম প্রসঙ্গ তুলে সাদাত বলেন, উনি যেভাবে আমাদের দেখেন। সব সময় আমাদের কাজগুলোকে ফলো করেন। শুধু তাই না, আমরা যখন ভালো কিছু করি তিনি নিজে তার প্রোফাইলে শেয়ার দেন। এটা আমাদের তরুণদের জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা। আর জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড, জয় বাংলা কনসার্ট বা লেটস টক, এ ধরণের আয়োজন শুধু আমাদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে না। এটি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকেও অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। তারাও এগিয়ে আসছে। আমি বলতে পারি, আমার ৫-৬ বছর আগের প্রজন্মের জন্য এমন কোন সুযোগই ছিলো না। তাই জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানাবার পাশাপাশি অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই, আমার মত এমন অনেক তরুণের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকার জন্য।
ইত্তেফাক/আর