শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

গবেষণায় প্রকাশ

নতুন রূপে সাইবার অপরাধ ঝুঁকিতে শিশুরা

আপডেট : ২২ মে ২০২৩, ০২:৩১

সাইবার অপরাধ ঝুঁকিতে শিশুরা। নতুন রূপে বাড়ছে সাইবার অপরাধপ্রবণতা এবং বুলিং কমেছে বলে এক গবেষণায় প্রকাশ করা হয়। গত শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাইবার অপরাধপ্রবণতা-২০২৩ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এই খাতের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ)। সাইবার স্পেসে ভুক্তভোগীদের দেওয়া মতামতের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

ধারাবাহিকভাবে পঞ্চম বারের মতো প্রকাশিত এই প্রতিবেদন বলছে, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন ধরনের অপরাধের মাত্রা বেড়েছে। প্রতিবেদনে ২০১৫-২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের পরিসংখ্যান পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে বেশ কয়েকটি ধাপে। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি (২ শতাংশের বেশি) অপপ্রচারের শিকার হয় শিশুরা। বয়সভিত্তিক অপরাধের ধরনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে তরুণেরা (১৮ থেকে ৩০ বছর) সর্বোচ্চ (১২ শতাংশের বেশি) একই ধরনের অপরাধের শিকার, সেখানে ১১টি ট্যাবে করা তথ্য বিশ্লেষণে ‘অন্যান্য’ অপরাধের মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে বলে দেখা যায়। প্রতিবেদনে ২০২২ সালের অন্যান্য অপরাধ ছিল ১ দশমিক ৮১ শতাংশ। ২০২৩ সালে প্রতিবেদনে এটি ৩৮১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে ৬ দশমিক ৯১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে নানা মাত্রিক প্রতারণা।  এই প্রতারণাগুলো হচ্ছে চাকরি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস ও অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে। তবে বরাবরের মতো অন্তর্জালের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হলেও বিগত পাঁচ বছরে তুলনামূলকভাবে কমছে সাইবার বুলিং-সংশ্লিষ্ট অপরাধের ঘটনা (অনলাইন ও ফোনে বার্তা পাঠানো, পর্ণোগ্রাফি, সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার ও ছবি বিকৃতি)। এ ধরনের অপরাধ ২০২২ সালে ৫২ দশমিক ২১ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০১৭ সালে ছিল ৫৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। সামাজিক মাধ্যমসহ অন্যান্য আইডি হ্যাকিংয়ের ঘটনাগুলো ধারাবাহিকভাবে কমলেও আর্থসংশ্লিষ্ট প্রতারণা থেমে নেই। ২০২২ সালে ভুক্তভোগীদের ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশই অনলাইনে পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে ভুক্তভোগীদের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমের আইডি হ্যাকিংয়ের শিকার সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশই নারী। তার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে অভিযোগের হার দিনে দিনে কমছে। ২০১৮ সালে অভিযোগকারীর শতকরা হার ছিল ৬১ শতাংশ, ২০২৩-এ গিয়ে তা কমে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমেছে। এছাড়া ২০২৩ সালের জরিপে ভুক্তভোগীদের ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশের বয়সই ১৮ বছরের নিচে, যা ২০১৮ সালের জরিপের তুলনায় ১৪০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি।

সংগঠনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন পেশ করেন গবেষণা পর্ষদের সদস্য স্বর্ণা সাহা। সিসিএস কার্যনির্বাহী সদস্য খালেদা আক্তার লাবনীর সঞ্চালনায় প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা করেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন-আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া, বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাশেদা রওনক খান প্রমুখ।

ইত্তেফাক/ইআ