রংপুরে মুখে পানির পাইপ ঢুকিয়ে জোসনা বেগম (৪০) নামে গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় স্বামীসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার (২৪ মে) রাত ১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের গোপালদী গাজীপুরা এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব-১৩ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন নিহতের স্বামী আইনুল হক আয়ান (৪২) ও তার প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম (৪১)। তারা দু’জনেই নগরীর বীরভদ্র বালাটারীর মাহিগঞ্জ থানা এলাকার।
জানা যায়, আইনুল হক প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে জোসনা বেগমকে ১৬ বছর আগে বিয়ে করেন। এরই মধ্যে জোসনা তিন সন্তানের জন্ম দেয়। বিয়ের পর জোসনা বেগম জানতে পারের তার স্বামী আগের স্ত্রী রয়েছে। এনিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। প্রায়শই বাকবিতণ্ডা ও ঝগড়া হতো। গত ১৮ মে সকালে কিস্তি ও বাজার খরচের টাকা চাইলে আইনুল এবং তার প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম নিহত জোসনা বেগমকে গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। অবস্থা গুরুতর হলে চিকিৎসার না করে উল্টো তাকে ঘরের ভেতর আটকে রাখে তার স্বামী।
গত ১৯ মে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আবারও স্বামী আইনুল হক, প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম ও তার বন্ধু মিলন মিয়া (৪০) নিহত জোসনা বেগমকে অকথ্য নির্যাতন করে। নির্যাতনের একপর্যায়ে জোসনা বেগমের মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখের ভেতর পানির পাইপ ঢুকিয়ে পাম্প চালু করে দেয়। এ সময় অচেতন হয়ে পড়লে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে জোসনা বেগমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বোন বাদী হয়ে ২০ নগরীর মাহিগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাত ১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার গোপালদী গাজীপুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আইনুল হক ও তার প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যার কথা স্বীকার করে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।